প্রথমবারের মতো বগুড়ায় ফিলিপাইনের আখ ‘ব্ল্যাক সুগার কেইন’ চাষ শুরু হয়েছে। ১১ শতক জমিতে এই আখ চাষ করছেন সদর উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের কাজী নুরইল গ্রামের আহসানুল কবির ডালিম।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রশিক্ষকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে কৃষির প্রতি ঝুঁকে পড়া ডালিমের আখ ক্ষেতে ফলন ধরায় আশপাশের চাষিরাও ব্ল্যাক সুগার কেইন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
ডালিম জানান, আখটি দেখতে কালো খয়েরি। লম্বায় সাধারণত ১২ ফুট থেকে ১৬ ফুট হয়ে থাকে। দেশীয় আখেরমত হলেও রয়েছে বেশ কিছু ভিন্নতা। এই আখের কান্ড নরম, রস বেশি, মিষ্টি বেশি, চাষের পর লাভ বেশি। প্রায় দুই বছর আগে প্রথমে তিনি ১৬টি বীজ সংগ্রহ করেন। বীজ থেকে তার টিকে যায় ৮টি বীজ। সেই বীজ থেকে আরও বীজ তৈরি করে চাষ করেন।
চাষের পর এখন তার ক্ষেতে শোভা পাচ্ছে ২ হাজার ফিলিপাইনের আখ ব্ল্যাক সুগার কেইন। আখগুলো ১০ থেকে ১১ মাসে ফলন দেয়। গোড়ালি থেকে পুরো কান্ডই মোটা ও কিছুটা নরম। আখগুলো বড় হওয়ার পর বিভিন্ন নার্সারি মালিক ও কৃষি ভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আখ ক্ষেত পরিদর্শন করে বীজ কেনার জন্য ভিড় করছে।
চাষি আহসানুল কবির ডালিম জানান, তিনি পরিচিতজনের মাধ্যমে ফিলিপাইনের আখ ব্ল্যাক সুগার কেইন সংগ্রহ করার পর তার বাড়ির পাশের জমিতে চাষ করেন। বর্তমানে তার জমিতে ২ হাজারের বেশি আখ আছে। এই আখের কিছু অংশ বিক্রি করে খরচ তুলবেন আর কিছু অংশ দিয়ে বীজ তৈরি করে স্থানীয় চাষিদের মাঝে দিবেন। স্থানীয়রা চাষিরা তার কাছে বীজ নেওয়ার কথা বলেছেন।
তিনি জানান, স্থানীয় কয়েকজন যুবককে নিয়ে তিনি কর্ষণ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে ভিন্ন ও উৎপাদন বেশি এমন চাষবাস শুরু করেছেন।
বগুড়া সদর উপজেলার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক জানান, ফিলিপাইনের আখগুলো বগুড়ায় আর কেউ চাষ করেনি। ১১ শতক জমি থেকে যে ফলন পাবে তা সর্বনিম্মন ৫০ টাকা করে বিক্রি করলেও তিনি ১ লাখ টাকার ফলন বিক্রি করতে পারবে। আর যদি ১০০ টাকা করে বিক্রি করেন তাহলে তিনি দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। যা খরচ বাদে অর্ধেক টাকা তার আয় হবে। আর প্রতি বিঘা চাষের খরচ বাদে কৃষকের আয় হবে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।
আবার এক বিঘা জমিতে প্রায় ৫০ হাজার আখ পাওয়া যাবে। প্রতিটি আখ ১০ টাকা করে বিক্রি করলেও প্রায় ৫ লাখ টাকা হবে। সেখান থেকে ১ বিঘা জমির সার, সেচ, বীজ, শ্রম বাদ দিলে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা আয় করা যাবে বলে তিনি জানান।