Thursday, 28 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা চায় না বাকৃবি শিক্ষার্থীরা


করোনায় দীর্ঘ বিরতির পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) স্নাতক পর্যায়ের ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার পূর্বে অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিল।

এমন সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। তারা ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে সময় ক্ষেপণের পরিবর্তে দ্রুত অনলাইন কিংবা স্বশরীরে ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানান।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধের সময়গুলোতে অনলাইনে পরীক্ষা ছাড়াই কিছু ব্যবহারিক ক্লাস ব্যতীত দুই সেমিস্টারের সকল ক্লাস শেষ করে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে ক্রমাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসায় স্বশরীরে ব্যবহারিক ক্লাস বা পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ২০ মে (বৃহস্পতিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিলের বৈঠকে বাকৃবির বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র ক্লাস টেস্ট পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

আরো পড়ুন
পান চাষ পদ্ধতি

পান চাষ একটি লাভজনক কৃষি পদ্ধতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশে এটি ব্যাপক চাষ করা হয়। Read more

মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

সিদ্ধান্তে বলা হয়, প্রথমে ক্লাস টেস্ট পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেয়া হবে এবং ততদিনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে গেলে পরবর্তীতে স্বশরীরে ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হবে। কিন্তু এমন সিদ্ধান্তে করোনা মহামারি বিবেচনায় তারা ক্লাস পরীক্ষা না দিয়ে সরাসরি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন।

বাকৃবির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী গোবিন্দ চন্দ্র দাস বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের। ফাইনাল পরীক্ষা না হওয়াতে না পারছি চাকুরির পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে, না পারছি একাডেমিক পড়ালেখা করতে। এই সময়ে এসে যদি শুধুমাত্র ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আরো ক্ষতির মুখে পড়ব আমরা। এখন অনলাইনে ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা দিতেই ২-৩ মাসের মত লেগে যাবে। ক্লাস টেস্ট আলাদা করে না নিয়ে স্বশরীরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।

চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী রায়হাতুল জান্নাত জেরিন বলেন, আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ইন্টারনেট সমস্যার কারণে অনলাইনে ক্লাসগুলো ঠিকমত করতে পারেনি। গ্রাম এলাকায় যেসব শিক্ষার্থী আছে, তাদের অবস্থা আরো শোচনীয়। এসময়ে এসে শুধুমাত্র ক্লাস টেস্ট পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটুকু ফলপ্রসু হবে তা বুঝতে পারছি না। আমাদের দাবি হলো ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা আলাদা করে না দিয়ে স্বশরীরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হোক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. নুরুল হক বলেন, আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের পরীক্ষা অনলাইনে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আগে অনলাইনে ক্লাস টেস্ট পরীক্ষাগুলো চালু করব। সকল বর্ষের ১ম সেমিস্টারের অনলাইনে ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা আগে অনুষ্ঠিত হবে, তা শেষ হলে পরে ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে। আর ততদিনে বিশ^বিদ্যালয় খুলে দিলে স্বশরীরে হবে ফাইনাল, আর ততদিনেও না খুললে পরবর্তীতে ফাইনাল পরীক্ষা অনলাইনেই অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদের প্রায় চারশত শিক্ষার্থীর মধ্যে এক অনলাইন জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্লাস পরীক্ষা বাতিলের পক্ষে মত প্রদান করে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবি জানান। অবশিষ্ট কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী অটোপাশ এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ক্লাস পরীক্ষা গ্রহণের পক্ষে মত প্রদান করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, করোনায় আমরা জীবন ও জীবিকার মেলবন্ধনের এক দুঃসময়ে এগিয়ে চলছি। শিক্ষার্থীদেরকে আর হতাশার মধ্যে রাখা ঠিক হবে না। পরবর্তী ডিন কাউন্সিলের মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো আমি তুলে ধরবো। শিক্ষার্থীদেরকে অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে এই বিপর্যয়কালে কিভাবে তাদের সহযোগিতা করা যায়, সেই উদ্যোগ আমরা নিবো।

0 comments on “অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা চায় না বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *