ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের। বোরো ক্ষেতে দ্বিতীয় দফার নিড়ানি, সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কাজ চলছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ও পানি সুবিধা ভালো থাকায় শঙ্কামুক্ত রয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় কৃষকরা জমির পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ মৌসুমে ধানের ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা সদরের পৌর এলাকার তারাগন, দেবগ্রাম, খড়মপুর, দূর্গাপুরসহ উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্দ, ধরখার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বোরো ক্ষেতে সবুজে সমারোহ হয়ে আছে। যে দিকে চোখ যায় মাঠে শুধু ধান ক্ষেত চোখে পড়ে। ইতিমধ্যে কোন কোন জমিতে ধানের শীষ বের হতে শুরু হয়েছে।
সঠিক সময়ে চারা রোপণ, নিবিড় পরিচর্যা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথা সময়ে সেচ ও সার দেয়া সবই করেছে স্থানীয় কৃষকরা। সেইসাথে ফলন ভালো করতে নিয়মিত কৃষি কর্মকর্তারা তদারকিও করছেন। রোগ বালাইয়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদেরকে ধান জমিতে কঞ্চি ও গাছের ডাল পুতে পাখি দিয়ে পোকা মাকড় দমনে তারা উৎসাহিত করছেন। এ উপজেলায় বি-আর ২৮, বি-আর ২৯, হীরা, হাইব্রিড সবুজ সাথী, এসএলএইডএইচ, জাগরনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ করা হয়।
এদিকে কৃষি অফিস বলছেন, তারা রোগ বালাই ও পোকামাকড় হতে ফসল রক্ষায় মাঠে মাঠে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কৃষকদেরকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
তারাগনের কৃষক মো. আলম খা বলেন, তিনি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর প্রায় ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। সব জমির ফসলের পরিচর্যার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন পর্যন্ত তেমন বড় ধরনের রোগবালাই দেখা যায়নি। ফসলের জমির অবস্থা ভালো, এ জন্য ভালো ফলনের আশাবাদী তিনি।
মোগড়া ইউনিয়নের কৃষক এমরান আলী জানায়, গত মৌসুমের ক্ষতি পোষাতে ধার দেনা করে ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়। বর্তমানে ধান জমির অবস্থা খুবই ভালো বলে জানায়। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে বাম্পার ফলনের আশা করেন তিনি।
কৃষক আবুল হোসেন বলেন, দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়। আর কয়েক দিন পর ধান জমিতে শীষ বের হবে। তবে জমির দিকে তাকালে মন জুড়ে যায।
উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক বলেন, এ উপজেলার প্রায় সব মাঠেই বোরো ধানের চাষ হয়ে থাকে। অনুকুল আবহাওয়া, প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ, চাহিদানুযায়ী কৃষি উপকরণ সরবরাহের কারণে অধিক আগ্রহের সঙ্গে কৃষকরা বোরো চাষ করেছেন।