Monday, 25 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

‘১২ বছরে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে’


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধবনীতি ও নানামুখী প্রণোদনার ফলে বিগত ১২ বছরে দেশে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের বেশিরভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় এবং এর পিছনে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। দেশে তেল উৎপাদনের মূল বাধা হলো জমির স্বল্পতা। ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল ও স্বল্পকালীন উন্নত জাতের ধান ও সরিষার জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর চাষ দ্রুত কৃষকের নিকট ছড়িয়ে দেওয়া ও জনপ্রিয় করতে পারলে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি না কমিয়েও অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষাসহ তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ান সম্ভব হবে।

বুধবার (২৩ জুন) সকালে সচিবালয়ের অফিস কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন
পান চাষ পদ্ধতি

পান চাষ একটি লাভজনক কৃষি পদ্ধতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশে এটি ব্যাপক চাষ করা হয়। Read more

মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো: আব্দুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) হাসানুজ্জামান কল্লোল বক্তব্য রাখেন। প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক মো: জসীম উদ্দিন।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টনে।

প্রকল্পের উপস্থাপনায় জানানো হয়, দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদার ৯০% আসে বিদেশ থেকে আর দেশে উৎপাদন হয় মাত্র ১০%। ২০১৮-১৯ সালে বিদেশ থেকে প্রায় ৪৭ লাখ মেট্রিক টন তেল ফসল আমদানি করতে হয়েছে, যার পিছনে ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

দেশে তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনের মূল সমস্যা হলো জমির স্বল্পতা। ধানসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় কৃষকেরা এ ফসল চাষে কম আগ্রহী। বর্তমানে দেশে ফসল আবাদের ৭৫% জমিতে দানাজাতীয় ফসলের চাষ হয়। অন্যদিকে ক্রমশ তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সালে তেল এবং চর্বি ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২.২২ মিলিয়ন টন, তা বেড়ে ২০১৯ সালে হয়েছে ৩.০৮ মিলিয়ন টন। মাথাপিছু তেল ও চর্বি ব্যবহারের পরিমাণ বছরে ২০১৫ সালে ছিল ১৩.৮০ কেজি, তা বেড়ে ২০১৯ সালে হয়েছে ১৮.৭ কেজি।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ব্রিধান-৭১, ব্রিধান ৮১, ব্রিধান৮৯, ব্রিধান ৯২সহ উন্নতজাতের ধান চাষ করে হেক্টর প্রতি এক টন উৎপাদন বাড়ান সম্ভব। এটি করতে পারলে ১০% জমি উদ্বৃত্ত থাকবে যাতে ধান চাষ না করে অন্যান্য ফসল চাষ করা যাবে। এছাড়া, উন্নত জাতের ধান ও সরিষার চাষ করে শস্যের নিবিড়তা বাড়ানোও সম্ভব।

উল্লেখ্য, ২৭৮ কোটি টাকার ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি ২০২০-২০২৫ মেয়াদে ২৫০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে প্রচলিত শস্য বিন্যাসে কৃষিগবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিক্ষীত স্বল্পমেয়াদি তেল ফসলের আধুনিক জাত অন্তর্ভুক্ত করে সরিষা, তিল, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, সয়াবিনসহ তেল ফসলের আবাদ এলাকা ২০% বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া, বিএআরআই ও বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত তেল ফসলের আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং মৌ-চাষ অন্তর্ভুক্ত করে তেলজাতীয় ফসলের হেক্টর প্রতি ফলনও ১৫- ২০% বৃদ্ধি পাবে। ফলে, তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে ও আমদানির পরিমাণ হ্রাস পাবে।

0 comments on “‘১২ বছরে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *