এক ধরনের উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টা হল বেবিকর্ন বা কচি ভুট্টা । বর্তমানে এই ধরনের জাতের ভুট্টার চাষাবাদ খুব জনপ্রিয় হচ্ছে। একই সাথে এটি যেমন পুষ্টিকর ও তেমনই লাভজনক ফসল। এটি ছোট অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়।বেবিকর্ন বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্টে, হোটেলে, ফাষ্টফুড এমনকি আজকাল বাড়িতেও খাবারে রাখা হয় | নামে একই হলেও সাধারণ ভুট্টা থেকে এই ভুট্টার চাষাবাদ ও বীজ সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই বেবিকর্নের ব্যবহার প্রত্যক্ষ হয়।উৎপাদনের দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড বেবিকর্ন ।
কতটুকু বীজ লাগবে:
বীজের পরিমাণ মাটির প্রকৃতির উপর নির্ভর করে থাকে। মাটি ঝরঝরে ও রসালো, উর্বর হলে এক বিঘা জমির জন্য ৫-৬ কেজি বীজ লাগবে। সারাবছর বেবিকর্ন চাষ করা গেলেও অত্যাধিক বর্ষায় বীজ বপন করলে বীজ পচে যেতে পারে।
বেবিকর্নের বীজতলায় বীজ সারিবদ্ধভাবে বপন করে নেয়া উচিত। কারণ পরবর্তী সময়ে পুরুষ ফুল তোলার জন্য ভিতর দিয়ে যাতায়াত করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে একটি সারি থেকে একটি সারির দূরত্ব হবে ৩০ ইঞ্চি এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব হবে ৮-১০ ইঞ্চি।
কিভাবে সার প্রয়োগ করবেন:
এক বিঘা জমির হিসাবে প্রায় ৭৫কেজি ইউরিয়া দিতে হবে। এছাড়াও প্রায় ৪০ কেজি টিএসপি, ৫০ কেজি গোবর, ৪২ কেজি এমপি, প্রায় ২৫ কেজি জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে।
কিভাবে পরিচর্যা করবেন:
খুব সতর্কতার সহিত খেয়াল রা্খতে হবে যেন আগাছা না গজায়। বিশেষ করে বীজ বপনের পর থেকে ১ মাস পর্যন্ত। জমিতে যাতে আগাছা থাকলে আগাছার সাথে প্রতিযোগিতা করে বেবিকর্নের গাছ খাদ্য গ্রহণে ব্যত্যয় ঘটে। মাটির অবস্থা বুঝে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে মোচা আসার সময় মাটিতে পানির যোগান থাকতে হয়।
কিভাবে পুরুষ ফুল ভাঙ্গবেন:
বেবিকর্ন চাষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান কাজ পুরুষ ফুল তুলে ফেলা। বেবিকর্ণ ফসলে কোনরূপ পরাগায়নের প্রয়োজন নেই। গাছের বয়স ৪০-৪৫ দিন হলে গাছে পুরুষ ফুল চলে আসে। সবার উপরের পাতার মধ্যখানে পুরুষ ফুলের মোচা দৃশ্যমান হয়। এই দৃশ্যমান মোচাগুলো ফোটার আগেই তুলে দিতে হবে না হলে এটা ছোট ছোট ভু্ট্টা হয়ে যাবে।
কখন ফসল সংগ্রহ করবেন :
ফলনের জন্য বীজ বপনের দুই থেকে আড়াই মাস অপেক্ষা করতে হয়। কখনও কখনও সময়ের একটু বেশিও লাগতে পারে। ফসল সংগ্রহের সময় বেবিকর্নের মোচার সিল্কা ২ ইঞ্চি পরিমাণ লম্বা হয়েছে কিনা দেখে নিতে হবেনা হলে এর মান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।