শীতকালের অন্যতম প্রধান সবজি বেগুন। বেগুন, যার ইংরেজি নাম Egg-plant বৈজ্ঞানিক নাম Solanum melongena শীতকালীন সবজি হলেও সারা বছরই এর চাষ করা সম্ভব। বাংলাদেশের জনসাধারণ এর একটি বিশাল অংশ বেগুন খাবার হিসেবে পছন্দ করে।
উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান সবজি হল বেগুন। দেশীয় বাজারে দুই ধরনের বেগুন ওঠে, সাদা রঙের এবং বেগুনী রঙের। স্বাদের দিক থেকে বেগুনী রঙের বেগুন অনন্য।
খুব সহজেই ছাদে বেগুন চাষ করা সম্ভব। কিন্তু বেগুনের চাষে সতর্ক থাকতে হয়। কারন এ গাছে রোগবালাই ও পোকার আক্রমন বেশী। সুতরাং জেনে নেয়া যাক করার বিস্তারিত পদ্ধতি।
সহজেই ছাদে বেগুন চাষ
বেগুন চাষের জন্য পলি দো-আঁশ মাটি ও এটেঁল দো-আঁশ মাটি খুব বেশী কার্যকরি। বেগুনের ভাল ফলন হয় এই ধরনের মাটিতে।
প্রথমে বীজতলায় বীজ থেকে চারা তৈরি করতে হবে। এরপরে চারা টবে রোপণ করতে হবে।
ছাদে বীজতলা তৈরির জন্য কাঠের বাক্স, প্লাস্টিকের ট্রে, গামলা ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ তলায় দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে ।
বেলে দোআঁশ মাটির সাথে জৈব সার মিশিয়ে দিয়ে বীজতলার পাত্রটি পূর্ণ করতে হবে। তারপর তাতে বেগুনের বীজ বুনতে হবে।
বেগুনের রোগের অধিকাংশই বীজ বাহিত। তাই বপনের আগেই বীজ শোধন করতে হবে । শোধনকৃত বীজগুলো অন্তত ৫/৬ ঘন্টা ছায়ার মধ্যে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর এই বীজ বীজতলায় বপন করে দিতে হবে।
বোনার পর হাত দিয়ে মাটি সমান করে চেপে দিতে হবে। বীজ বোনার একমাস পর বেগুনের চারা লাগানোর উপযুক্ত হয়। চারা উঠানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন শিকড় বেশী কাটা না পড়ে। শিকড়ের সাথে কিছুটা মাটি থাকা আবশ্যক।
টবে গাছ রোপন
১০-১২ ইঞ্চি আকারের মাটির টব জোগাড় করতে হবে। এর বদলে হাফ ড্রামও ব্যবহার করা যেতে পারে। এবার মাটি তৈরির জন্য ২ ভাগ এঁটেল দোআঁশ বা পলি দোআঁশ মাটি নিতে হবে।
এর সাথে গোবর ১ ভাগ, টি,এস,পি, পটাশ সারসহ সকল সারের ২০-৩০ গ্রাম একত্রে নিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে।
এরপর মাটি ভিজিয়ে তা ১০-১২ দিন রেখে দিতে হবে। ৪-৫ পর আবার মাটি খুচিয়ে আরও কয়েকদিন ফেলে রাখতে হবে। মাটি ঝুরঝুরে হলে তা টবে পূরণ করে বেগুনের চারা লাগাতে হবে।
চারা বিকালে রোপন করলে ভাল। চারা গাছটি সোজা করে লাগিয়ে গোড়ার দিকে মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবে। এতে গাছের গোড়ায় পানি জমতে পারবে না।
কিভাবে পরিচর্যা করবেন
নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। মাঝে মাঝে মাটি আলগা করে দিতে হবে।
কিভাবে পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন করবেন
বেগুনের গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ ঘটে খুব। ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা খুব বেশি ক্ষতি করে।
গাছের ঢলে পড়া আর গোড়া পচা এর রোগের মধ্যে অন্যতম। এসব থেকে রক্ষা পেতে হলে মাঝে মাঝে কিটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়।