একটি গুল্মজাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ হল সর্পগন্ধা বা সর্পমূল গাছ। সর্পগন্ধা ১৮ মাসের মধ্যে প্রস্তুত হয়। একটি কার্যকরী ঔষুধ হিসেবে এর ব্যবহার অনেক। সর্পগন্ধা গাছের সব কিছুই ব্যবহার করা সম্ভব। অনেকেই এর গুণ জানি কিন্তু উৎপাদন বা কিভাবে চাষ করব জানিনা। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক সর্পগন্ধা উদ্ভিদের চাষ হয় কিভাবে ।
কিভাবে চারা তৈরি করবেন
এর বীজ তৈরি করতে হবে মূলত যে কোন একটি নার্সারিতে । সাধারণত মে-জুন মাস থেকে বীজ তৈরি করতে হয়। তৈরিকৃত বীজ পরবর্তীতে আগস্ট মাসে বপন করতে হয়। বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করতে হলে এক হেক্টরের জন্য ৮-১০ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। অঙ্কুরোদগম হয়ে যায় বীজ বপন করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই । বীজগুলি বপন করতে হবে একটি থেকে আরেকটি ২০-২৫ সে.মি. দূরত্বে এবং ২ সে.মি গভীর গর্তে । চারা রোপণ পদ্ধতি শুরু করতে হবে ২ মাস পরে।
কিভাবে কলম তৈরি করবেন
সর্পগন্ধার একটি উৎকৃষ্ট কলমের জন্য ২.৫ – ৫ সে.মি পুরু কাণ্ড প্রয়োজন হবে। এই কান্ড ছোটো ছোটো টুকরো করে নিতে হবে। কলমগুলো ৫ সে.মি গভীর গর্ত করে রেখে দিতে হবে। তিন সপ্তাহ পরে কাণ্ড বড় হয়ে যাবে। এরপর এই কলম ক্ষেতে রোপন করতে হবে। গাছটি পুরোপুরি তৈরি হবার জন্য কাণ্ডটি ১৫-২০ সে.মি পুরু হতে হবে। অতঃপর ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে এটি স্থায়ীভাবে প্রস্তুত হয়ে যাবে। এবার এটা ক্ষেতে রোপন করতে হবে।
চাষের জন্য কতটা তাপমাত্রা প্রয়োজন হবে
সর্পগন্ধা চাষের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা হল ১০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড – ৩৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত । চাষের জন্য খুব ভাল সময়কাল হল জুন থেকে আগস্ট মাস। সর্পগন্ধা সঠিকভাবে চাষের জন্য অন্তত ১২০০-১৮০০ মিটার এলাকা দরকার হবে। সর্পগন্ধার চাষ করা যায় বীজ, কলম এবং রুটের দ্বারা। সহজেই এই তিনটির যেকোন একটি দ্বারা চাষ করা যেতে পারে। সর্পগন্ধা চাষ করে খুব সহজেই কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন।
ঔষধি গুণ
১। রক্তচাপ কমায়, স্নায়ুতন্ত্র শিথিল করে ও উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করে সর্পগন্ধার শিকড়। কিন্তু মূলত এর ব্যবহার হয় রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য। তাছাড়া এটি উত্তেজনা নাশ করে এবং ভাল ঘুমের কারণ হয়।
২। বিষধর সাপের কামড়ে সর্পগন্ধা বায়ুচাপ দমন করে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। েএতে চিকিৎসকরা চিকিৎসা করার জন্য কিছুটা বেশি সময় পান।
৩। বিভিন্ন স্নায়ুবিক রোগের চিকিৎসায় কার্যকর।
৪। মূলের নির্যাস প্রসব ত্বরান্বিত করে। পেটের ব্যাথা জনিত রোগ এবং কালাজ্বরের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়।