শীতকালে পরিবেশের তাপমাত্রা ১০ডিগ্রী এর নিচে চলে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে এই তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হয় । তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতকালে কুয়াশা বৃদ্ধি পায় ।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাণীর অভ্যন্তরীণ বিপাকীয় এবং অভ্যাসগত পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন গবাদিপশুর স্বাস্থ্যে এবং উৎপাদনে ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
আমাদের দেশের জেবু জাতের গরু গরম আবহাওয়ায় অধিক সহনশীল হওয়ায় শীতকালে তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাস্থ্যগত ও অভ্যাসগত পরিবর্তন হয়। ইউরোপিয়ান বস টোরাস যেহেতু ঠান্ডা আবহাওয়ায় অধিক সহনশীল, তাই এই জাতের শীতের সাথে যুদ্ধ করার ক্ষমতাও বেশি।
দেশি জাতের সাথে সংকরায়ণের ফলে এদের শীত সহ্য ক্ষমতা তুলনামূলক কমে যায়। তাই শীতকালে গরুর স্বাস্থ্যের দিকে কিছু বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ জরুরি।
শীতকালে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুরও নানা রোগ বালাই দেখা যায়। ফলে গবাদি পশুর দেহের ওজন কমে যায় এবং দুধ উৎপাদন কমে যায়।
শীত কালে গবাদি পশুর যে রোগ গুলো বেশি দেখা যায়ঃ
গবাদি পশুর বিভিন্ন রোগ শীতকালে দেখা দেয় এর মধ্যে রয়েছে আঁটালি, গলা ফোলা, ক্ষুরারোগ, বাদলা, ক্যাসিওলিয়াসি রোগ তড়কা রোগ,বাদলা ও নিউমোনিয়া ইত্যাদি।
শীতকালের গবাদিপশুর রোগ নিয়ন্ত্রনে করনীয়ঃ
বেশি শীতে গবাদিপশুর রোগ নিয়ন্ত্রনে করণীয় বিষয়গুলো হল-
১। পশুর যেন বেশি ঠান্ডা লাগে খেয়াল রাখুন। গবাদিপশুর শরীর পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখুন। শরীর শুষ্ক ও শুকনো রাখুন।
২। কুয়াসায় পশু যেন ভিজে না যায় খেয়াল রাখুন। এতে নিউমোনিয়া হবার সম্ভাবনা থাকে।
৩। ক্ষুরা, বাদলা, তড়কা, গলাফুলা ইত্যাদি রোগের টিকা শীত আসার আগে গবাদি পশুকে দেয়া নিশ্চিত করুন।
৪। শীত আসার আগে পশুকে কৃমির ঔষধ দিন। এতে ফ্যাসিওলিওসিস রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে না।
৫। পশুকে হালকা গরম পানি মিশানো খাবার দিলে বেশি ভাল।
৬। শীতে হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত ও উৎপাদন বজায় রাখতে CATOFORCE INJECTION অথবা Pro-Mix Powder খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
৭। শীতে অত্যাবশ্যকীয় মিনারেলের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধে Calfostonic Powder এবং Bonacal-P Powder, অথবা Superamino injection এবং Calci Max injection ইত্যাদি চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসাবে উপকারি।
এ ছাড়া প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র সাথে রাখতে হবে। শীতকালে জ্বর, নাক দিয়ে তরল পড়া কিংবা ভাইরাস জনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। রোগের উপসর্গ দেখা মাত্র পশুকে আলাদা করে রাখতে হবে এবং স্থানীয় পশু চিকিৎসক অথবা পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
Shamima Nashreen
November 8, 2020 at 6:07 pmInformative post