শীত মানেই হরেক রকম শাকসবজির বাহার। খেজুরের রস, পিঠা-পায়েশ যেন শীতের কনকনে ঠাণ্ডাকেও মিষ্টি করে তোলে। আরও মিষ্টি করে তোলে শীতের ফল। এ ঋতুর কমলা, কুল, সফেদা, জলপাই ইত্যাদি ফল মুখের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়। এসব ফল ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও নানা ফাইটো নিউট্রিয়েন্টে ভরপুর থাকে।
সফেদা: সফেদা দেখতে সুন্দর না হলেও নানা গুণে সমৃদ্ধ। সুগন্ধ আর মিষ্টতার দিক দিয়ে ফলটি অনেক এগিয়ে। অপুষ্টি, পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি, হার্টের দুর্বলতা ইত্যাদি রোগে পাকা সফেদা উপকারি। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সফেদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ডালিম: ডালিম জনপ্রিয় ফলগুলোর একটি। ফলটি কারও কাছে বেদানা, কারও কাছে আনার নামে পরিচিত। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তিন ধরনের ডালিমের উল্লেখ পাওয়া যায়- মধুর ডালিম, কষায় ডালিম ও টক ডালিম। মধুর ডালিমের দানা বেশি লাল, রসালো ও উপকারি। আমাশয়, হৃদরোগ, লিভার বৃদ্ধি, অনিদ্রা, অজীর্ণ, রক্তপিত্ত, অরুচি, কৃমি, শ্বেতপ্রদহ, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ডালিম উপকারি।
কমলা: শীতের ফলের রাজা বলা হয় কমলাকে। গুণে ফলটির তুলনা নেই। বর্তমানে আমাদের দেশের পার্বত্য অঞ্চলে কিছু কিছু কমলার চাষ হচ্ছে। কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে । হৃদরোগীদের জন্য কমলা খুবই উপকারি। প্রতিদিন একটা কমলা খেলে অপুষ্টি দূর হবে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে।
কুল: শীতের জনপ্রিয় ফল কুল। সচরাচর দেশের সব জায়গাতেই দেখা যায়। কুল নানা জাতের হয়। যেমন- নারকেল কুল, আপেল কুল, বাউ কুল ইত্যাদি। তবে সব জাতের কুলই উপকারি। ফোঁড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, প্রদাহ, রক্ত আমাশয়, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা কুল, কুলের পাতা, ছাল সমাধান করতে পারে।
জলপাই: শীত ঋতুর জনপ্রিয় ফল জলপাই। জলপাইয়ের পাতা ও ফল দুটোই উপকারি। ফলের রস থেকে তৈরি হয় তেল যার অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। টক জাতীয় এ ফলে রয়েছে ভিটামিন এ, সি ও ই। ভিটামিনগুলো দেহের রোগজীবাণু ধ্বংস করে, উচ্চরক্তচাপ কমায়, রক্তে চর্বি জমে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে, হৃদপিণ্ডের রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, কোলনের পাকস্থলির ক্যান্সার দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।
আমলকী: শীতের সুস্বাদু এবং উপকারি ফল আমলকী। আমলকীকে বলা হয় ভিটামিন ‘সি’-এর রাজা। আর এ ভিটামিন সি ত্বক সুরক্ষা, মাড়ি মজবুত এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
ঋতুভিত্তিক ফল ঋতুর অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধ করে। এছাড়া ফলই বলের উৎস।