ডিমের পর এবার মুরগির বাচ্চা নিয়েও করপোরেট কারসাজির অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। মুরগীর বাচ্চার দাম দ্বিগুন বেড়েছে।
এতে দ্রুত দেশের ব্রয়লার মুরগি আর ডিমের দাম আবারও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা।
গত অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি যে মুরগির বাচ্চার দাম ছিল ২৭ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে সেই মুরগির বাচ্চা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৫২ টাকায়।
মুরগীর বাচ্চার দাম দ্বিগুন হলেও বাড়ে নাই মুরগীর দাম। এতে লাভ তো দূরের কথা বরং লোকসানের আশঙ্কায় আছেন প্রান্তিক খামারিরা।
খামারিরা জানিয়েছেন গত মাসে মুরগির বাচ্চার দাম ছিল ৩৬ টাকা। তখন বাজারে রেডি ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৩৮ থেকে ১৪০ টাকা। এখন বাচ্চার দাম ৫২ টাকা হয়ে গিয়েছে। বাড়তি দাম দিয়ে বাচ্চা কিনলেও বাজারে মুরগির দাম আগের মতোই।
সাধারণত একটি ব্রয়লার বাচ্চা মুরগির পরিণত হতে বা দেড় কেজির মতো ওজনে আসতে ৩০ থেকে ৩২ দিনের মতো সময় লাগে। তাতে মুরগির বাচ্চা, ফিডসহ যাবতীয় খরচ মিলিয়ে ১৫৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
কর্পোরেট কারসাজিতে মুরগির বাচ্চা
আগস্টে খাদ্য খাতে রেকর্ড ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এর জন্য মুরগি ও ডিমের দামকে দায়ী করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
আর মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার পেছনে খামারিরা অভিযোগের তীর ছুড়ছে সংশ্লিষ্ট কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর দিকে।
আগে বাংলাদেশের কর্পোরেট গ্রুপগুলো শুধুমাত্র ফিড ও বাচ্চা উৎপাদন করত। তখন বাজারে স্থিতিশীলতা ছিল বলে দাবি করেছেন খামারিরা।
কিন্তু ২০২০ সালের করোনা মহামারির পর থেকে কর্পোরেট গ্রুপগুলো ডিম-মুরগি উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকেই ইচ্ছামতো মুরগির ফিড নাহলে বাচ্চার দাম বাড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে বলে খামারিরা জানাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে এই কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো দিনে সাড়ে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিপিএ) সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।
তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রতিদিন ২৪ লাখ ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা এবং দুই লাখ লেয়ার বাচ্চা উৎপাদিত হয়। সব মিলিয়ে হয় মোট ২৬ লাখ।
“সে হিসাবে একটি বাচ্চায় যদি গড়ে ২৫ টাকার বেশি নিলে দেখা যাচ্ছে, কর্পোরেট গ্রুপগুলো সিন্ডিকেট করে প্রতিদিন ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নিচ্ছে” তিনি জানাচ্ছেন।
@বিবিসি অবলম্বনে