মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে ২০১৯ সালে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। গত বছর রেকর্ড পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয়েছে দেশে। স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।
দেশের প্রধানত তিনটি উৎস হালদা,যমুনা ও পদ্মা দেশি কার্প মাছের যোগানদাতা। এ সব উৎস থেকে মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, ঘনিয়া, বাটা প্রভৃতি।
ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি ও ব্রুড উন্নয়ন কেন্দ্র, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার হালদা, পদ্মা, যমুনা নদীর রেনু সংগ্রহ করে ব্রুড ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে উন্নত মানসম্পন্ন ব্রুড উৎপাদন করে ব্র্যাক ফিশারিজের অন্য ৪ টি হ্যাচারিতে সরবরাহ করার মাধ্যমে প্রায় ১০,৫০০ কেজি রেনু উৎপাদন করছে। অত্র হ্যাচারি হতে উৎপাদিত রেনু প্রায় ১৪,০০০ চাষীর মাছ উৎপাদনে সহযোগিতা করে আসছে।
ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি শ্রীমঙ্গল ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রায় ২৭৭৫ কেজি রেনু ও প্রায় ৫ কোটি মনোসেক্স তেলাপিয়া পোনা ও ৬০০ টন খাদ্য মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রোটিন চাহিদা পূরণে অবদান রাখছে।
মোঃ ফারাজুল কবির, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৌলভীবাজার বলেন, অত্র জেলায় রেনু ও পোনা উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক অনন্য প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি ও ব্রুড উন্নয়ন কেন্দ্র। তাদের উৎপাদিত বাংলা ও কার্প মাছের রেনু এবং মনোসেক্স তেলাপিয়া সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চাষিদের কাছে পৌঁছেছে। সকল স্টেকহোল্ডারদের আস্থা ও ভরসা নিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
হাবিগঞ্জ, সিলেট হতে আগত চাষি ফজলু মিয়া জানান, তিনি আগে অন্য হ্যাচারি থেকে রেনু নিতেন। কিন্তু সেই রেনুর গুনগত মান ভালো না হওয়ায় তিনি তার পরিচিত একজন চাষির পরামর্শে ব্র্যাক থেকে রেনু নিতে এসেছেন। তেমনই আরেকজন চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতি বছর শ্রীমঙ্গল হ্যাচারি থেকে রেনু-পোনা ক্রয় করি কারণ এখানের রেনু-পোনা দ্রুত বাড়ে ও মানসম্পন্ন।
ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি ও ব্রুড উন্নয়ন কেন্দ্র, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার এর সিনিয়র ব্যবস্থাপক মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের উৎপাদিত রেনু-পোনা সিলেট সহ গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, যশোর ইত্যাদি জেলায় যাচ্ছে। চাষিদের মাঝে ব্র্যাকের রেনু-পোনার ব্যাপক চাহিদা ও সুনাম রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়ই নতুন চাষিরা রেনু-পোনা সংগ্রহের জন্য হ্যাচারিতে আসেন।
উন্নত মাছ তৈরিতে কেন প্রয়োজন প্রাকৃতিক উৎসের মা মাছ ?
প্রাকৃতিক উৎসের মাছে হয় না কোন হাইব্রিডিজাইশন। বিভিন্ন উৎস হবার কারনে ইন ব্রিডিং হবার সম্ভাবনা থাকে না।
ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি, বগুড়ার ব্যবস্থাপক মোঃ ফরহাদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, অত্র হ্যাচারিতে ক্যাট ফিশ জাতীয় মাছের রেনুর পাশাপাশি বাংলা মাছের রেনুও উৎপাদন হয় যার মধ্যে পাবদার রেনুর চাহিদা অনেক। খাল, বিল (চলন বিল), নদী ইত্যাদি স্থানীয় উৎস থেকে ভালো মানের ব্রুড সংগ্রহ করে রেনু উৎপাদন করা হয়।
নাজমুল হাসান, ব্যবস্থাপক, নোয়াখালী ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি বলেন, ব্র্যাকের রেনু পোনার ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও সুনাম থাকায় অত্র জেলায় আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করি এবং চাষিদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
ব্র্যাক ফিশ হ্যাচারি, টেবুনিয়া, পাবনার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান জানান যে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস- হালদা, পদ্মা, যমুনা এবং প্রতিষ্ঠান- বি.এফ.আর.আই, ওয়ার্ল্ড ফিশ থেকে রেনু ও ব্রুড সংগ্রহ করে পরিকল্পিত ব্রিডিং এর মাধ্যমে ব্রুড মাছ প্রস্তুত করা হয়। ব্রাকের রেনু ও পোনা ক্রস ও ইনব্রিডিং মুক্ত এবং বৃদ্ধির হার অনেক ভালো হওয়ায় চাষি পর্যায়ে ব্র্যাকের রেনু-পোনার চাহিদা সর্বোচ্চ।
মোঃ জিল্লুর রহমান, উপপরিচালক, মৎস্য অধিদপ্তর হ্যাচারি পরিদর্শন করে বলেন, ভালো জাতের গুণগত মানসম্পন্ন মাছ ও রেনু-পোনা উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম রয়েছে এবং চমৎকার পরিবেশে এখানে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে এই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা প্রশংসনীয়।
Shahin Ahmod
April 21, 2022 at 3:27 pmI need to your contact number please
এগ্রোবিডি২৪
April 24, 2022 at 4:52 pmআপনাকে ধন্যবাদ। ব্র্যাক ফিসারিজের সাথে যোগাযোগ করতে কল করুন – ০১৭৩০৩৪৭৮৪৪ নম্বরে।