নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা প্রতিবছরই বোরো ধান রক্ষায় দুশ্চিন্তায় থাকেন। বোরো রক্ষায় প্রতিবছরই চলে বাঁধ নির্মাণ কাজ। এ বছরও চলছে বাঁধ নির্মানের কাজ। তবে এবছর পানি দেরিতে সরায় ও নির্ধারিত সময়ের পরে শুরু হওয়া ধীরগতির নির্মাণ কাজে অকাল বন্যায় ফসলহানির আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে বাঁধ নির্মাণে কোনও রকম অনিয়ম ছাড়াই নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জেলার হাওরাঞ্চলে ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ৩২০ কিলোমিটার। এর মধ্যে এবছর প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৬৩ টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামত করা হবে। চলছে চর হাইজধা বাঁধের কাজ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মদন-মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরী ও কলমাকান্দাসহ বিস্তীর্ন এলাকা জুরে হাওরাঞ্চল। ইতিমধ্যেই এ অঞ্চলের চাষাবাদ শেষ করে ফেলেছেন কৃষকরা। কিন্ত দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন হাওরপাড়ের কৃষকেরা। এবার আগাম বন্যায় একমাত্র ফসল হারানোর শঙ্কায় এখন তারা।
এদিকে, ফসল রক্ষায় সরকার প্রতি বছর বাঁধ নির্মানে কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দিলেও সময়মতো এবং সঠিক নিয়মে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রায় বছরই ডুবে যায় এ সকল কৃষকের স্বপ্ন।
এবার হাওরের পানি নামতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে পিআইসি গঠন হয়নি। ফলে দেরিতে শুরু হয়েছে বাঁধ নির্মান কাজ। এদিকে, কাজ শেষ করার সময় বেধে দেয়া হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারী। কিন্তু সে সময় পর্যন্ত কাজ শেষ করতে করতে অনেক বছর মার্চেই পানি এসে যায়। আবার কাজ শেষ হলেও কাঁচা মাটি থাকায় পানির তোরে ভেঙ্গে যায় এসকল বাঁধ। যে কারনে হাওরের মানুষ প্রতিবছরই জানুয়ারী মাসেই এসকল কাজ শেষ করার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু এবছরও কাজই শুরু হয়েছে জানুয়ারী মাসের শেষ থেকে। যে কারণে সময়মতো নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
তবে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, পিইসিকে মোটিভেশন করা হচ্ছে যাতে কাজটা নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়ে যায়।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, আমি নিয়মতি পরিদর্শন করছি। কোনও ধরনের দুর্নীতি চোখে পড়লে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে দুর্নীতি করার কোনও সুযোগ নেই। কাজে গাফিলতি রয়েছে জানালে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।