Friday, 26 September, 2025

দুশ্চিন্তায় গোলাপ গ্রামের চাষিরা, ক্ষতি হতে পারে ১০০ কোটি টাকা


গ্রাম হলেও বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফসলের খেত এর বদলে রয়েছে গোলাপের খেত। সবকিছু ছাপিয়ে এ এক ভিন্ন গ্রাম। মাইলের পর মাইল শুধু গোলাপ আর গোলাপ। গোলাপের আধিপত্য সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের। আর তাই এদের নাম লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে পরিচিতি পেয়েছে ‘গোলাপ গ্রাম’ হিসেবে। কিন্তু দুশ্চিন্তায় গোলাপ গ্রামের চাষিরা, অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির দুশ্চিন্তায় গোলাপ গ্রামের চাষিরা এখন তাকিয়ে আছেন সামনের দিকে।

গোলাপ গ্রামের মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস এই গোলাপ ফুল

পাশাপাশি বিভিন্ন ফুল যেমন জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, ক্যালেন্ডুলা, গাঁদা প্রভৃতি চাষও হয় এখানে।

আরো পড়ুন
ধানের বাম্পার ফলন: ফুল ফোটার সময় কৃষকের করণীয়

বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। এ দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এই ফসলের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ধানের ফলন বাড়াতে হলে এর Read more

ঢাকায় শুরু হলো আগ্রোফরেস্ট্রি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং গ্রামীণ জীবিকা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ বৈঠক। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) Read more

কিন্তু করোনার কারণে বিধিনিষেধ থাকায় তারা বিপণন করতে পারেননি।

সেই সাথে যুক্ত হয়েছে বাগানে ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব।

এতে সাভারের প্রায় ১০০ কোটি টাকার এই ফুলের বাজার নিয়ে বেশ চিন্তিত ফুলচাষিরা।

গোলাপ গ্রাম সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখর থাকে।

শহুরে জীবনের একঘেয়েমি দূর করতে অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে আসেন এখানে।

টাটকা ফুল কেনার পাশাপাশি স্থানীয় শ্যামপুর ও মৈস্তাপাড়ায় গড়ে ওঠা রাতের ফুলের বাজার থেকে স্থানীয় ফড়িয়ারা ফুল কিনেন।

পরবর্তীতে সরাসরি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করেন তারা।

বিভিন্ন উৎসবের ওপর ভিত্তি করে সাধারণত বাগান ও স্থানীয় বাজারে গোলাপের দাম উঠানামা করে থাকে।

তবে এবার ফুলের বেচাকেনা নিয়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সাভার উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাভারের বিভিন্ন এলাকায় ফুলের চাষ হচ্ছে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে।

বিরুলিয়া ইউনিয়নে ২০০ থেকে ২২০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হচ্ছে।

অন্যদিকে বনগাঁও ও ভাকুর্তা ইউনিয়নের বেশ কিছু জায়গায়ও ফুলের চাষ হচ্ছে।

ফুলচাষিরা আশা করেছিলেন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বড় অঙ্কের বাণিজ্যের।

কিন্তু সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

যার কারণে এসব অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে তাদের মনে।

অন্যদিকে বেশ কয়েকটি বাগানে ছত্রাকের প্রাদুর্ভাবে চিন্তিত চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ।

তিনি বলেন, সব ঠিক থাকলে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদী।

গত বছর লোকসান হয়েছিল ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার।

তিনি আরও বলেন করোনার সময় ফুল নিয়ে যাবার জন্য বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে।

ছত্রাকের আক্রমণ সম্পর্কে তিনি জানান, ২০১৭ সালেও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এমন হয়েছিল।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ তারা নিচ্ছেন এবং কৃষকদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ঋণের বিষয়ে ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

0 comments on “দুশ্চিন্তায় গোলাপ গ্রামের চাষিরা, ক্ষতি হতে পারে ১০০ কোটি টাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ