ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র চিনিকল বন্ধ হয়ে গেছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে। চলতি বছর আখ মাড়াই মৌসুম কেবলই চালু হয়েছে। আর শুরু হবার সাথে সাথেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে চিনিকলটি। ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র চিনিকল বন্ধ হবার কারণে আখ নিয়ে সেতাবগঞ্জ, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের আখ চাষিরা বিপাকে পড়েছেন।
চিনিকল এলাকা ঘুরে দেখা যায় আখের গাড়ি লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। চিনিকল কর্তৃপক্ষ মাড়াইয়ের জন্য আখ নিচ্ছে না। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র চিনিকল বন্ধ হয়ে যায়।
একমাত্র চিনিকল বন্ধ হওয়ায় লোকসান গুণছেন চাষিরা
অনেক চাষিই এখন লোকসানের প্রহর গুনছে।
ক্ষোভের কারণে অনেকেই চিনিকল সংলগ্ন মাঠে আখ ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন নিজের বাসায়।
রহিমানপুর এলাকার আখচাষি ফয়েজ উদ্দীন জানান, চলতি বছর ৮ একর জমিতে আখ চাষ করেছেন।
চলতি বছর আখ দেয়ার অনুমতি থাকায় তিনি চিনিকলে দুই গাড়ি আখ নিয়ে গেছেন মাড়াইয়ের জন্য।
কিন্ত কর্তৃপক্ষ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আখ মাড়াই বন্ধ রাখায় আখ নিচ্ছেন না তারা।
এই চাষি অভিযোগ করেন যান্ত্রিক ত্রুটি হতে পারে এমন সংবাদ মিল কর্তৃপক্ষ মাইকিং করলে তাদের আখ নিয়ে এত সমস্যা হতো না।
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ডিসেম্বর পঞ্চগড়, সেতাবগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ের আখসহ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়।
এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এ বছর উদ্বোধন হয় মাড়াই মৌসুম।
কিন্তু তার পরদিন ভোর থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়।
তিনি আরও জানান, এরপর থেকে প্রতিদিন দুয়েক ঘণ্টা করে চিনিকল চললেও বেশির ভাগ সময় তা বন্ধই থাকে।
এখন যান্ত্রিক ত্রুটির হবার কারণে এই মিলটি আর বর্তমানে চলছে না।
সেকারণেই আখ মাড়াই কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
তবে তিনি আশ্বাস দেন যে শিগগিরই সমস্যা সমাধান করা হবে। এবং কৃষকদের সমস্যাটি জানাতে মাইকিং করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেল।
তিনি বলেন, ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আজ অবধি মিলটির তেমন যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন করা হয়নি।
একদিকে মিল কর্তৃপক্ষ আখচাষিদের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করার কথা বলেন।
কিন্তু তারা যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের দিকে তেমন কোনো জোরালো ভূমিকা রাখছে না।
যার ফলে কৃষকরা এর কুফল ভোগ করছে।
আর আখ মাড়াই করতে না পারার কারণে সকল আখ শুকিয়ে যাচ্ছে।
এতে লোকসানের মুখে পড়েছে আখ চাষিরা।
এমন চলতে থাকলে এই মিলটিও বন্ধ হবে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।