কদবেল (wood apple) খুব স্বাদের একটা ঔষধি গুনসম্পন্ন ফল। দেখতে টেনিস বলের মত এই ফলতখন পাওয়া যায়, যখন অন্য কোন ফল বাজারে পাওয়া যায় না । বিশেষ করে বর্ষার শেষে এই কদবেল বেশি পাওয়া যায়।
পাকা কদবেলের কদর মূলত মুখরোচক অম্ল-মধুর স্বাদের জন্য। প্রায় সব বয়সের মানুষের কাছে এটি খুব পছন্দের ফল। বিভিন্ন দোকানে দেখাযায় যে পাকা ফল ছিদ্র করে কাঠি দিয়ে এর শাস খাওয়া হচ্ছে।
কদবেল ফলের শাঁস পেকে গেলে নরম হয়ে যায়। এর শাস চটকালে মাখনের মতো গলে যায়। এতে থাকে ছোট ছোট অনেক হালকা বাদামি রঙের বীজ।
কদবেলের বীজ থেকে সহজেই চারাগাছ হয়। টবেও এগাছ সহজে রোপন করা যায়, তবে তা কলমের সাহায্যে। চলুন জেনে নিই ছাদে বা টবে কদবেল গাছের চাষ।
কিভাবে টবে কদবেল চাষ করবেন
কমপক্ষে ২০ ইঞ্চি সাইজের ড্রাম বা টব সংগ্রহ করতে হবে । এই ড্রামের নিচের দিকে কয়েকটি ছিদ্র করতে হবে । এতে গাছের গোড়ায় পানি জমে গাছ পচে যাবেনা ।
তলার এই ছিদ্রগুলো ইটের ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করতে হবে । যেখানে সবসময় রোদ থাকে টবের গাছটিকে সেখানে রাখতে হবে ।
এবার বেলে দোআঁশ মাটির সাথে, গোবর, টি,এস,পি সার, পটাশ সার, সরিষার খৈল একত্রে মিশিয়ে পানি দিয়ে ফেলে রাখতে হবে।
এইভাবে ১০-১২ দিন পর আবার মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে আরও ৮-১০ দিন ফেলে রাখতে হবে । মাটি ঝুরঝুরে হলে একটি সবল সুস্থ কলমের চারা টবে লাগাতে হবে।
গাছের গোড়া থেকে মাটি যেন আলাদা না হয়ে যায় । গাছ লাগানোর পর একটি সোজা কঞ্চি দিয়ে গাছটিকে বেধে দিতে হবে যেন সোজা হয়ে থাকে ।
কিভাবে পরিচর্যা করবেনঃ
কলমের গাছে ফুল আসে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে। শরৎকালে বা সেপ্টেম্বর মাসে এই ফল পাকতে শুরু করে। কিছু ডালপালা ছেঁটে দিতে হয় ফল তোলার সময়।
ছাটাই করলে পরবর্তী বছরগুলোতে বেশি ফল আসবে। প্রতি বছর ফল তোলার পর গাছের গোড়ার মাটিতে সার দিতে হবে।
প্রতি টবে ইউরিয়া সার ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম, এমওপি সার ১০০ গ্রাম, টিএসপি সার ১০০ গ্রাম দিতে হবে। এর সাথে দুই কেজি কম্পোস্ট সার মিশিয়ে দিবেন। আগাছা পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত।
কদবেল এর উপকারিতা
কদবেল রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। বুক ধড়ফড় এবং রক্তের নিম্নচাপ রোধেও সহায়ক।
গুড় বা মিছরির সঙ্গে কদবেল মিশিয়ে খেলে শরীরের শক্তি বাড়ে এবং রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
কদবেলে রয়েছে ট্যানিন নামক উপাদান, যা দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা ভালো করে।