বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও সুস্বাদু একটি ফল সফেদা। মেটে রঙ ও খসখসে খোসা বিশিষ্ট এই ফল খেতে খুব ভাল ও মিষ্টি। পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এতে শ্বেতসার, খনিজ, লবন ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। সফেদার চাষ করা হয় বাংলাদেশের সব জায়গায়। এটি উৎপন্ন হয় যে কোন মাটিতে । তবে বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার এই গাছ চাষের জন্য উত্তম। চাইলে সহজেই ছাদে সফেদা গাছের চাষ করা যায়।
ছাদে সফেদা গাছের চাষ
প্রথমে সফেদার জাত নির্বাচন করতে হবে। বারি সফেদা-১, বারি সফেদা-২, বারি সফেদা-৩ খুব ভাল জাত এবং রোগ সহিষ্ঞু।
একটি বড় সাইজের টব বাছাই করে নিন। প্রায় ৪৫ কেজি মাটি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হলে ভাল হয়। বড় ড্রাম কেটেও তৈরি করা যাবে, তবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে সুবিধাজনক।
ভাল নিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত বেলে দো-আশ মাটি ব্যবহার করতে হবে।
টবে বেলে দো-আশ মাটির সাথে গোবর সার বা ভার্মিকম্পোষ্ট, কোকোপিট ইত্যাদি মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রন পানিতে কিছুটা ভিজিয়ে কয়েকদিন রেখে দিতে হবে। তারপর এই মিশ্রিত মাটি দিয়ে টবটি পূর্ণ করতে হবে।
মাটির এই মিশ্রণে বিভিন্ন রাসায়নিক সার যেমন টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, বোরন সার ইত্যাদি মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। মিশ্রিত এই মাটিতে উদ্ভিদ বৃদ্ধির জন্য ও গৌণ পুষ্টিগুলো সহজে পেয়ে যাবে।
সফেদা গাছ লাগানোর জন্য বর্ষার শেষদিকে উপযুক্ত সময়। অর্থাৎ জুলাই মাসে।
মিশ্রিত মাটি কয়েকদিন রেখে দেবার পর মাটি যখন ঝুরঝুরে হবে তখন চারা লাগাতে হবে। চারা লাগানোর ক্ষেত্রে সফেদার সুস্থ এবং সবল চারা বেছে নিতে হবে। গাছ লাগানোর পরে একটা বাশের কঞ্চি দিয়ে সোজা করে বেধে রাখতে হবে। মাটি একটু উচু করে দিতে হবে, যেন গাছের গোড়ায় পানি না জমে।
কিভাবে পরিচর্যা করবেন
প্রথম দুই-তিন মাসে যথেষ্ট পরিমান পানি সেচ দিতে হবে।
বর্ষা আসার আগেই ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
ফুল আসার আগেই কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে, ফুল আসার সময় করা যাবে না।
নিয়মিত গাছের ডাল-পালা ছাটাই করতে হবে।
রোগ-বালাই দমন
সফেদা গাছে মূলত একটি পোকার আক্রমণ দেখা যায়। কান্ড ছিদ্রকারী এই পোকার দমন থেকে রক্ষা করতে হলে প্যারাডাইক্লোরবেনজিন প্রয়োগ করা যেতে পারে। আবার পাউডারি মিলিউড রোগের আক্রমণ হলে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।