Wednesday, 12 March, 2025

সর্বাধিক পঠিত

ঘোড়া দিয়ে আলু উত্তোলন হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলায়


বিস্তৃত এলাকাজুড়ে আলুর খেতে চলমান আলু তোলার ব্যস্ততা। লাঙলের ফলার টানে মাটির নিচ থেকে আলু তুলে আনা হচ্ছে।  এক জোড়া ঘোড়া করছে এই লাংগল টানার কাজ। হালের ঘোড়া জোড়াটির মালিক কৃষক ভূষণ রায়-ভানু রানী দম্পতি। তাদের ঘোড়া দিয়ে আলু উত্তোলন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। টাকার বিনিময়ে  ঘোড়া দিয়ে আলু উত্তোলন ছাড়াও  অন্যের জমিতে হালচাষ করেন তাঁরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ধন্দোগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ভূষণ-ভানু দম্পতির।

পরিবার বলতে  এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁদের সংসার।

আরো পড়ুন
বছরে ২৩০টি ডিম দেয় নতুন জাতের ‘বাউ ডাক’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) উদ্ভাবিত নতুন জাতের হাঁস ‘বাউ-ডাক’ দেশের হাঁস খামার ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। যেখানে দেশি Read more

মৎস্য খাতে তরুণদের আগ্রহ আশাব্যঞ্জক: ফরিদা আখতার
fish conference

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তরুণদের মধ্যে মৎস্য খাতে কাজ করার প্রতি যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত Read more

ধন্দোগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভূষণ আলু খেতে ঘোড়ার হাল দিয়ে জমির নিচের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তার পাশে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন ভানু।

হাল শেষ হলে জোয়াল থেকে বাঁধন খুলে ভানু ঘোড়া জোড়াটি নিয়ে চলে যান অন্য খেতে।

অন্যদিকে ভূষণ লাঙল-জোয়াল ঘাড়ে নিয়ে তাঁর পিছু পিছু যান।

ভূষণ আগে গরু দিয়েই হাল টানাতেন বলে জানান।

গত বছরের শুরুতে সংসারে টাকার প্রয়োজন হয়।

তখন হালের একটি গরু বিক্রি করে দেন তিনি।

এদিকে হাল চাষে সমস্যা হলে হালের অন্য গরুটি বিক্রি করে ২২ হাজার টাকায় এক জোড়া ঘোড়া কেনেন।

তারপর ঘোড়া জোড়ায় লাঙলের জোয়াল জুড়ে দিয়ে হালের কসরত শেখাতে শুরু করেন এ দম্পতি।

এ দম্পতি আরও জানান, গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম কম।

তাছাড়া ঘোড়ার শক্তি গরুর তুলনায় বেশি হওয়ায় বেশি জমির পাশাপাশি গভীরভাবেও হালচাষ করা যায়।

এখনকার বাজারে এক জোড়া হালের গরুর দাম ১ লাখ টাকার উপর।

কিন্তু এক জোড়া ঘোড়ার দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

জমিতে হাল দিতে বিঘা প্রতি ৬০০ টাকা করে পাচ্ছেন এ দম্পতি।

প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই বিঘা জমিতে হালচাষ করা যায়।

এতে ঘোড়ার খাবার খরচ হয়েও হাতে বেশ কিছু টাকাও থাকে।

ভানু জানান, তাঁরা ঘোড়া দুটিকে ছোলা, ভুসি, খুদি চালের ভাত খেতে দেন।

এখন তাঁদের ঘোড়াগুলো হালচাষ করতে পারে। ঘোড়াগুলোকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যে ইশারা করলে এরা নিজেরাই হাল টানা শুরু করে।

তার মতে গরুর চেয়ে ঘোড়াই এ ব্যাপারে বেশি ভালো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবু হোসেন।

তিনি জানান, শ্রমজীবী মানুষ নানা প্রয়োজনে নতুন নতুন ধারণার জন্ম দিয়ে থাকে।

ঘোড়া দিয়ে হালচাষের ধারণাটিও তেমন, এই এলাকায় একেবারেই নতুন।

এ কারণে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে ঘোড়া টানা হাল দিয়ে জমির চাষ করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তবে পশু দিয়ে হালচাষ ছেড়ে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে বলে মত দেন এ কর্মকর্তা।

0 comments on “ঘোড়া দিয়ে আলু উত্তোলন হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ