বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বরগুনা জেলায় দুই দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে দমকা বাতাস। যার প্রভাবে আমন খেতের ধান গাছ গুলো একদম হেলে পড়েছে। এরূপ বৈরী আবহাওয়ার দরুন কৃষকেরা জেলার আমন ও খেসারি ডালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বরগুনা জেলার কৃষকরা এখন দুশ্চিন্তায় ভুগছে।
সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী গ্রামগুলো ঘুরে ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
আমন ধানের গাছ গুলো দুই দিনের টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে মাটিতে নুয়ে পড়েছে।
বৃষ্টির পানি নুয়ে পড়া গাছগুলোর নিচেই জমে আছে।
কৃষকরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন
দরখালী গ্রামের কৃষক মোশাররফ খান।
তিনি বলেন, অনেক ধান পড়ে গেছে বৃষ্টিতে।
অর্ধেক ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলে তার মনে হচ্ছে।
এমনিতেই তারা কৃষি কাজ করে লোকসানে আছেন।
এবছর তারা আমনের ছড়া দেখে লোকসানের কথা ভুলে গিয়েছিলেন বলে জানান।
অসময়ে এরকম ঝড়বৃষ্টির কারণে চাষাবাদের খরচের ধারদেনা কাটিয়ে উঠতে পারবেন না বলেই আশঙ্কা এই কৃষকের।
সদর উপজেলার খাজুরতলা গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান।
তিনি দুই একর জমিতে এবছর আমন ধানের আবাদ করেন।
এবার আমনের ফলন ভালো হয়েছে দেখে তিনি আশায় বুক বেধেছিলেন।
কিন্তু অসময়ের বৃষ্টিতে তাঁর খেতে পানি জমে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা করছেন তিনি।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে জানানো হয়, জেলায় চলতি বছরে আমন আবাদ হয়েছে ৯৮ হাজার হেক্টর জমিতে।
অন্যদিকে খেসারি ডালের আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে।
অবশ্য কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তেমন কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
আমন ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ডালের আবাদ নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা আছে।
বরগুনা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে এখন বৃষ্টি হচ্ছে।
এতে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না আমন ধানের।
তবে এ ধরণের আবহাওয়াতে আমন খেতে শিশ পোকাড় আক্রমণ দেখা দেবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ পোকার আক্রমণে বৃষ্টির চেয়ে আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে।
বরগুনা কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) এস এম বদরুল আলম।
তিনি জানান, আর যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমন ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
তবে দুই দিনের বৃষ্টিতে খেসারি ডালের খেতগুলোতে পানি জমেছে।
এতে ডালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।