বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলছিল আন্দোলন। সেই আন্দোলনের ইতি টানতে চলেছেন ভারতের কৃষকেরা। পাঞ্জাবসহ বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে কৃষকেরা আন্দোলন শুরু করেন। রাজধানীর বুকে এই আন্দোলন শুরু হয় তাদের। গত বৃহস্পতিবার গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকে বসেন তাঁরা। সেখানকার ইতিবাচক সিদ্ধান্তের ফলেই আন্দোলনের ইতি টানতে চলেছেন তারা। ১১ ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁরা ঘরে ফিরতে শুরু করবেন।
এনডিটিভির খবরে জানানো হয় আন্দোলন ইতির কথা
ভারতের এনডিটিভির এক খবরে জানানো হয়, আরেকটি বৈঠক করবে কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিষান মোর্চা ১৫ ডিসেম্বর।
সেদিন আলোচনা হবে কেন্দ্র কথা রেখেছে কি না সে বিষয়ে।
এর ফলশ্রুতিতেই আন্দোলন এগিয়ে নেবার বিষয়ে কৃষকেরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
হিন্দুস্তান টাইমস–এর এক খবরে জানানো হয়, কেন্দ্র কৃষকদেরকে আশ্বাস দেয় দাবি মেনে নেবার।
এর পরই বছরব্যাপী চলা এই আন্দোলন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষকেরা।
তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালে মারা গেছেন কৃষক।
কেন্দ্র ইতিমধ্যে আশ্বাস দিয়েছে সেসকল কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এছাড়া সমস্ত আন্দোলন–সম্পর্কিত মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলেও কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার পাঁচ সদস্যের কমিটির কাছে কেন্দ্র থেকে প্রস্তাব পাঠায় সরকার।
এর এক দিন পরই আন্দোলন প্রত্যাহারের এ ঘোষণা এসেছে।
এ আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
গত ১৯ নভেম্বর তিন আইনই প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।
এ সিদ্ধান্তের কথা তিনি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানান।
তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর তিনি কৃষকদের ঘরে ফেরার অনুরোধ করেন।
কিন্তু সে অনুরোধে কৃষকেরা তেমন সাড়া দেননি।
গত ২৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল অনুমোদন দেয়।
এর আগে অবশ্য ২১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ছয় দফা দাবি জানিয়ে কৃষকেরা চিঠি লিখেছিলেন।
তাতে বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিষয়টি কেবল তাঁদের অনেকগুলো উদ্বেগের একটির সমাধান বলে জানান তারা।
কোভিড পরিস্থিতির সময় এই তিন কৃষি আইন প্রণয়নে কেন্দ্র অধ্যাদেশ জারি করেছিল।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে সংসদের খণ্ডকালীন অধিবেশনে বিরোধীদের দাবি উপেক্ষা করে তিনটি আইন পাস করা হয়।
মোদি সরকারের দাবি করেছিল, এই তিন কৃষি আইন মূলত তিনটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কার্যকর করা হচ্ছে।
কৃষিক্ষেত্রে ফড়িয়া বা দালালদের আধিপত্য কমানো, রাজ্যগুলোতে চুক্তিভিত্তিক চাষের ব্যবস্থা আইনসিদ্ধ করা।
অপর উদ্দেশ্যটি হচ্ছে কৃষিপণ্য বিপণন আইন দূর করে আন্তরাজ্য কৃষিপণ্যের অবাধ বাণিজ্যের রাস্তা উন্মুক্ত করা।
তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে কৃষকদের দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
ফসলের ন্যায্য মূল্য পেতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্র সরকার এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছে।
এনডিটিভি জানায়, শুক্রবার বিকেল থেকে সিঙ্ঘু বর্ডার খালি করতে শুরু করবেন কৃষকেরা।
তাবে গতকাল কৃষকেরা বিজয় প্রার্থনা ও বিজয় মিছিল করেন।