আবারও ইলিশ মাছ আহরনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের স্বার্থেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
গত বুধবার মৎস্য অধিদপ্তরে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় তার বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
শ ম রেজাউল করিম তার বক্তব্যে বলেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও অভিযান পরিচালনা করা হয় মূলত মৎস্যজীবীদের স্বার্থেই । এটি জাতীয় স্বার্থ। যারা এটি ধ্বংস করতে চাইবে, তাদের বিষয়ে কোনো ধরনের বিবেচনা বা অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই বলে মন্ত্রী হুশিয়ারি দেন।
যতটা কঠিন হবার প্রয়োজন, ততটাই হতে হবে
মন্ত্রী আরও সতর্ক করেন, এ ক্ষেত্রে কঠিন থেকে কঠিনতর পদক্ষেপ নিতে সরকার কোন প্রকার কুণ্ঠাবোধ করবে না। দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় যতটা কঠিন হওয়া প্রয়োজন হবে, ঠিক ততটাই কঠিন হতে হবে।
কাউকে এ বিষয়ে এক চুল পরিমাণ ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন কোনোভাবেই মৎস্য খাতকে ধ্বংস হতে দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা, নজরদারি ও পৃষ্ঠপোষকতায় মাছে-ভাতে বাঙালির বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার ও কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
খাদ্যের চাহিদা পূরণ থেকে শুরু করে বেকারত্ব দূরীকরণ, উদ্যোক্তা তৈরি ও গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে । একই সাথে এতে দেশের রপ্তানি আয় বাড়ছে।’
টাস্কফোর্সের এই সভায় চলতি বছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ শিকার বন্ধ থাকবে মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে সারা দেশে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, বিপণন, পরিবহন, মজুত ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শুধু ইলিশই নয়, ইলিশের প্রজননক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য শিকার নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। টাস্কফোর্স জানায় ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে ও মা-ইলিশ সংরক্ষণে এ কার্যক্রম নেয়া হয়েছে।
সাধারণত ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ে আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ দিনের মধ্যে। সাগরের নোনা জল ছেড়ে এই সময়ে তাই নদীমুখে ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
প্রতিবছর এ সময়টাতে মা-ইলিশ রক্ষার অংশ হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরেই ইলিশ ধরা বন্ধ রেখে আসছে সরকার। এ উদ্যোগ মূলত মা-ইলিশ যেন নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার সুযোগ পায় সেটি নিশ্চিত করতেই নেয়া হয়। দেশে ইলিশের উৎপাদন এর ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ।