সারা বিশ্বে সুপারফুড হিসেবে পরিচিত ‘কিনোয়া’। এই সুপারফুড কিনোয়ার আবাদ হচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে। এ অঞ্চলের মাগুড়া ইউনিয়নের দুই কৃষক তাদের এক বিঘা জমিতে সুপারফুড কিনোয়ার আবাদ করেছেন।
পথ দেখাচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা
এই দানাদার ফসল আবাদে কৃষকদের পথ দেখাচ্ছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, কিনোয়া একটি দানাদার জাতীয় শস্য।
প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল, পটাশিয়াম ও আয়রন থাকে এতে।
যার কারণে নাসার মহাকাশচারীরা এটি খেয়ে থাকেন।
এই শস্যে গ্লাইসেন ইনডেক্স কম থাকে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।
কিনোয়াতে ১৪-১৮ শতাংশ প্রোটিন আছে।
দানাদার এই শস্যটি ওজন কমানোয় এটি সহযোগিতা করে, সেই সাথে সবজি হিসেবেও এটি সুস্বাদু।
পোলাও, খিচুড়ি হিসেবে কিংবা সালাদ, স্যান্ডউইচেও খাওয়া যায়।
রান্না করার সময় পরিমাণে এটি চার গুণ বৃদ্ধি পায়।
পেটে দীর্ঘ সময় থাকতে পারা এই শস্যের চাষ স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া কাউনের বিকল্প হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
শস্য হিসেবে কিনোয়ার বীজ খাওয়া হয়।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এটির চাষ ছড়িয়ে ১৯৮৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চাষ হচ্ছে।
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশেও এর বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে পাহাড়ি অঞ্চলে এটি চাষ হয়।
তবে স্থানীয় বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশের জলবায়ুর উপযোগী জাত তৈরি করেছেন।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস এই কিনোয়ার দেশে চাষযোগ্য প্রকরণ উদ্ভাবন করেছেন।
ইতোমধ্যে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় এর আবাদ শুরু হয়েছে।
মাগুড়া ইউনিয়নের কৃষক শাহজাহান আলী ও বিহারী রায় ২০ শতক জমিতে কিনোয়া আবাদ করেছেন।
কৃষক শাহজাহান আলী জানান যে, অনেক দামি এ ফসল এর আগে কখনও এদিকে চাষ হয়নি।
এক বিঘা জমিতে লাখ টাকারও বেশি লাভ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করেন।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়।
তিনি জানান, এই ফসল উদ্ভাবনের পর চার-পাঁচটি উপজেলায় আবাদ হচ্ছে।
এটি পুরোপুরি নতুন শস্য উল্লেখ করে তিনি জানান যে এর চাহিদা রয়েছে অনেক।
প্রতি কেজি ১২০০ টাকা দরেও বিক্রি হয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস জানান, ধনী-গরিব সবার জন্য এই ফসল উদ্ভাবন করা হয়েছে।
যাতে সকলের জন্য পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক হয়।
এই ফসল বাজারজাত করা নিয়েও প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান এই গবেষক।