
মুগডাল চাষে ব্যস্ত পটুয়াখালীর কৃষকরা। তবে কিছু কিছু এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত আধুনিক বীজ বপন যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে। পাওয়ার ট্রিলার অপারেটর সিডার নামক এ যন্ত্রের ব্যবহার করা হচ্ছে এবার বীজবপনের কাজে। এতে মুগডাল বপন সহজ হবার পাশাপাশি উৎপাদন খরচও অনেক কমে গেছে। পাশাপাশি মুগ ডালের ফলনও অনেক বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। মুগডাল চাষে ব্যস্ত মানুষগুলো পুরো উদ্যোমে কাজ করছে।
জমি চাষ ও বীজ বপন মেশিনের মাধ্যমে সহজ
কৃষক পর্যায়ে এই যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাশাপাশি তাদের জন্য নিয়মিত মাঠ দিবসের আয়োজন করছেন সংশ্লিষ্টরা।
‘পাওয়ার ট্রিলার অপারেটর সিডার মেশিন’ এর গুণাগুণ অনেক।
একই সঙ্গে এই যন্ত্র জমিতে চাষ দেয়া, বীজ বপন এবং জমি সমান করার কাজ করছে ।
যার কারণে কম সময়ে ও কম শ্রমিক ব্যবহারে মুগ ডাল এর বীজ বপন করা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, এই যন্ত্র ব্যবহারে চাষাবাদে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বীজ কম লাগে।
পাশাপাশি জমির আগাছা পরিষ্কার ও ফসল সংগ্রহও সহজ হচ্ছে।
এসব কারণে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ কৃষক পর্যায়ে এই যন্ত্র ব্যবহার উপযোগী করতে উদ্যোগ নিয়েছে।
সম্প্রতি এই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠ দিবসের আয়োজন হয়।
এতে স্থানীয় কৃষকদের এই যন্ত্র সম্পর্কে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ হয়।
নির্দিষ্ট দুরত্বে বীজ বপন হয়
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. মো. কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, এই বীজ বপন যন্ত্রটি পাওয়ার ট্রিলারের সঙ্গে যুক্ত করা যায়।
এতে একই সঙ্গে জমিতে চাষ দেয়া, বীজ বপন এবং জমির লেভেলিং সম্ভব হচ্ছে।
এতে বীজের পরিমাণ কম লাগার পাশাপাশি নির্দিষ্ট দূরত্বে বীজ বপন সম্ভব।
তিনি এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই যন্ত্র ব্যবহারে ফলন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত যেমন বেশি হয়।
তেমনি বীজ বপনের ক্ষেত্রেও অন্তত ২৫ শতাংশ পরিমাণ বীজ কম প্রয়োজন হয়।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালী সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শহিদুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, কৃষকরা চাইলে এই মেশিন ব্যক্তিত ভাবে কিংবা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কিনতে পারবেন।
সরকার এ ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতির জন্য ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
পটুয়াখালী জেলায় সারাদেশে উৎপাদিত মুগডালের বড় একটি অংশ উৎপাদিত হয়।
আধুনিক এসব যন্ত্র ব্যবহার করে কৃষক আরও বেশি ফলন পেতে পারেন।
এ কারণে এবার বারি মুগ-৬ জাতের ডাল বীজ ‘পাওয়ার ট্রিলার অপারেটর সিডার মেশিন দিয়ে বপন করা হচ্ছে।
কৃষকরা যাতে আধুনিক এসব কৃষি যন্ত্রপাতির সাথে নিজেদের সম্পৃক্থ করতে পারেন সেদিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
তারা কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য সহায়তা করা হচ্ছে।
বারি মুগ-৬ এর চাষ বেশি হয়
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সালেহ উদ্দিন।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলে মুগডালের ফলন ভালো হয়।
তাই এবারও সরকার বারি মুগ-৬ জাতটি চাষ করতে কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম মল্লিক।
তিনি জানান, পটুয়াখালী জেলায় প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে মুগডাল চাষ হয়।
এর মধ্যে বারি উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাত থাকলেও বারি মুগ-৬ বেশি চাষ হয়।