Monday, 25 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

বাঁধাকপির চাষ কিভাবে করবেন খুব সহজেই তা জেনে নিন


বাঁধাকপি রবি মৌসুমের একটি পুষ্টিকর সবজি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Brassica oleracea var capitata. বাঁধাকপির চাষ দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই হয়ে থাকে। বাঁধাকপির প্রায় সব জাতই বিদেশি ও হাইব্রিড যা উৎপাদিত হয়। এদেশে সব জাতের বীজ উৎপাদন করা যায় না। একটি অন্যতম পুষ্টিকর পাতা জাতীয় সবজি বাঁধাকপি। ‍যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। তাই বাঁধাকপির চাষ কিভাবে করবেন জেনে নিন এখনই।

মাটি কেমন হবেঃ

প্রায় সব ধরণের মাটিতে বাঁধাকপি জন্মে, অত্যধিক বেলে মাটি ছাড়া।

আরো পড়ুন
পান চাষ পদ্ধতি

পান চাষ একটি লাভজনক কৃষি পদ্ধতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশে এটি ব্যাপক চাষ করা হয়। Read more

মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

তবে এ ফসলের জন্য বেলে দোঁআশ থেকে পলি দোঁআশ মাটি উপযোগী।

কখন চাষ করবেনঃ

শীতকালে বাঁধাকপি ভালো হয়ে থাকে।

আগাম ও নাবী করেও শীত মৌসুমে চাষ করা যায়।

বীজ কতটুকু লাগবেঃ

জাত ভেদে শতক প্রতি বীজের প্রয়োজন হয় ২-৩ গ্রাম।

হেক্টর প্রতি বীজের প্রয়োজন ৫০০-৭০০ গ্রাম।

কিভাবে চারা উৎপাদন করতে হবেঃ

বীজতলায় বাঁধাকপির চারা উৎপাদন করে জমিতে লাগানো হয়।

বীজতলার আকার ১ মিটার পাশে ও লম্বায় ৩ মিটার হতে হবে।

বালি, মাটি ও জৈবসার সমপরিমাণে মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে বীজতলা তৈরি করতে হয়।

দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের আগে সার প্রয়োগ করতে হবে।

অন্তত ৭/৮ দিন পূর্বে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার মিশিয়ে দিতে হবে।

চারা ঠিকমত না বাড়লে প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার প্রতি বীজতলায় ছিটিয়ে দিতে হবে।

জমি কিভাবে তৈরি করবেনঃ

গভীর ভাবে জমিতে ৪-৫টি চাষ দিতে হবে।

মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করে নিতে হবে।

চারা কিভাবে রোপণ করবেনঃ

বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিন পর চারা বের হবে। ৫/৬টি পাতা বিশিষ্ট ১০-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয় চারা।

সাধারণত বিকেল বেলা চারা জমিতে রোপণ করতে হয়।

তবে চারা সুস্থ ও সবল হলে এক-দেড় মাস বয়সের চারা রোপণ করা যায়।

রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব হবে ৬০ সেন্টিমিটার।

প্রতি সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব হতে হবে ৪৫ সেন্টিমিটার।

এ হিসেবে প্রতি শতকে ১৫০ টির মতো চারার প্রয়োজন হবে।

বাড়ির আঙ্গিনায় ৫ মিটার লম্বা একটা বেড স্থাপনের জন্য ২০-২২ টি চারার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

চারাগুলো বেডে দুই সারিতে লাগাতে হবে।

আঙ্গিনায় লাগানোর জন্য কম চারার দরকার হয়।

সেজন্য কোন বিশ্বস্ত নার্সারি থেকে চারা কিনে লাগানো ভালো।

তবে একটা বেডে বাঁধাকপির চারা তৈরি করে অল্পদিনের মধ্যেই তা বিক্রি করা যায়।

এতে অধিক লাভবান হবার সাথে সাথে নিজের প্রয়োজনও মেটানো যায়।

কিভাবে সার প্রয়োগ করবেনঃ

প্রতি শতকে সার দিতে হবে গোবর ১২৫ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৮০০ গ্রাম, এমওপি ৬৫০ গ্রাম।

জমি তৈরির সময় সম্পূর্ণ গোবর ও টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে।

ইউরিয়া  ও এমওপি সার ২ কিস্তিতে চারা রোপণের ২০-২৫ দিন পর একবার দিতে হবে।

এরপর ৩০-৪০ দিন পর আর একবার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ দিতে হবে সার দেবার পর পরই।

এ ছাড়া সেচ দিতে হবে ২-৩ দিন পর পরই।

গাছ বড় হবার সাথে সাথে দুই সারির মাঝখান থেকে মাটি নালা তৈরি করতে হবে।

এতে সেচ দিতে অনেক বেশি সুবিধা হবে।

ফসল কখন সংগ্রহ হবেঃ

বাঁধাকপি চারা রোপণের ৯০-১০০ দিন পর সংগ্রহ করা যাবে।

গড়ে ২-২.৫ কেজি হয়ে থাকে প্রতিটি বাঁধাকপি।

শতক প্রতি ফলন হয় ১৫০-১৬০ কেজি।

একর প্রতি ২০-২৫ টন এবং প্রভাতী জাতের ফলন ৫০-৬০ টন/হেক্টর।

0 comments on “বাঁধাকপির চাষ কিভাবে করবেন খুব সহজেই তা জেনে নিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *