বছর ছয়েক আগে বেনজির হোসেন উচ্চমাধ্যমিক পাসের পরপরই মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে কাজ করে মাস শেষে হাজার বিশেক টাকা পকেটে থাকত। কিন্তু বিদেশবিভূঁইয়ে মন টিকছিল না বিধায় ফিরে এলেন দেশে। দেশে এসে শুরু দেশীয় মাছ পাবদা চাষ শুরু করেন। সফলতার দেখা পেয়েছেন দেশীয় মাছ পাবদা চাষ করে।
বেনজির এক দিনেই ১৭ লাখ টাকার মাছ গত ২৩ অক্টোবর বিক্রি করেছেন।
এখনো তাঁর পুকুরে কমপক্ষে রয়েছে ৫০ লাখ টাকার মাছ।
খুলনার ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের বাসিন্দা বেনজির।
অনেক বছর আগে বেনজিরের বাবা খুলনার ডুমুরিয়া থেকে পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে নারায়ণগঞ্জে পাড়ি জমান।
ব্যবসার পাশাপাশি সেখানে ওষুধের দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জেেই বেনজিরদের তিন ভাইয়ের সবারই বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা।
বেনজিরওঅন্য দুই ভাইয়ের পথ ধরে প্রবাসে পা রাখেন।
২০২০ সালের শুরুর দিকে প্রবাসে সাড়ে চার বছর পার করে দেশে ফেরেন বেনজির।
এর কিছুদিন পরই তাঁদের নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লেগে দোকানপাট সব পুড়ে যায়।
তখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রামের বাড়ি হাসানপুরে ফিরে আসেন।
বেনজির জানান যে তার অন্য দুই ভাইও দেশে ফিরে এসেছে এবং সবাই মিলে হাসানপুরেই থাকেন।
বর্তমানে তার দুই ভাইও মাছ চাষের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।
তাদের পুকুরের আয়তন প্রায় ৭০০ শতক।
বছরে প্রায় চার লাখ টাকায় সরকারি ওই জলাশয় তিনি পাঁচ বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন।
আলাউদ্দীন নামের তাঁর একজন স্বজন তার সাথে আছেন অংশীদার হিসেবে।
আলাউদ্দিনের অবশ্য আগে পাবদা চাষের অভিজ্ঞতা ছিল।
তাঁদের মৎস্য খামারে চারজন স্থায়ী কর্মী ও অস্থায়ীভাবে প্রতিদিন আরও দু-তিনজন কাজ করেন।
এ মৌসুমে প্রথম বারের মতো গত ২৩ অক্টোবর মাছ ধরেছেন বেনজির।
সেদিন তাঁর কাছ থেকে ভারতে পাবদা মাছ রপ্তানিকারকেরা ১৭ লাখ টাকার মাছ কিনেছেন।
ডুমুরিয়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক।
তিনি জানান যে, মৎস্য দপ্তর করোনাকালে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়।
বিদেশফেরত বেনজির মাছ চাষের আগ্রহের কথা জানান।
তাঁকে পাবদা চাষের পরামর্শ দেন তারা।
সঙ্গে তাঁর পাবদা চাষের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন স্বজন যুক্ত করে দেন তারা।
বেনজিরকে ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় ফেজ) প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তাঁরা এখন পর্যন্ত ব্যাপক সফল।