খুলনা জেলায় বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা। আমন ধানের আবাদ বেশি হয় জেলার উপকূলীয় দাকোপ উপজেলায়। গত কিছুদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। েএ অবস্থায় অনেকে নতুন করে বীজতলা তৈরি করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দাকোপ উপজেলায় চলতি মৌসুমে এখানে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১৯,৪০০ হেক্টর। তাই ১০১৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানের অতিবৃষ্টিতে প্রায় ৯৫ শতাংশ বীজতলা ডুবে গেছে। বহু্ এলাকার বীজতলা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায়১০০ হেক্টর জমিতে তৈরি বীজতলা পুরো নষ্ট হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১৫ জন চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি থেকে ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমন ধানের চারা সাধারণত রোপণ করা হয়।েএই ধানের বীজতলা তৈরি করা হয় আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। চাষিরা যদিও সময়মতো বীজতলা তৈরি করেছেন, তবে গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা বর্ষণে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে নিচু এলাকার সকল বীজতলা ডুবে গেছে। যেসব এলাকায় পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো, সেখান থেকে পানি নেমে গেলেও বীজতলার ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায় অনেক বীজতলা পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে আছে।
অভিযোগ আছে যে, অনিয়ম করে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে অথবা প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে থেকে অনেক ব্যক্তিরা খালের বেশিরভাগ দখলে রেখেছেন। এই দখলদার ও তাদের প্রতিনিধিরা খালে বেড়া ও জাল দিয়ে মাছ শিকার করেন। এতে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। যেমন প্রয়োজনের সময় পানি সরছে না। আবার দিন দিন খালের নাব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া জলকপাট ব্যবস্থপনায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা পানি ওঠানামা করার সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সব ধরনের চাষিদের কথা চিন্তা করে না। বিনা প্রয়োজনে জলকপাট দিয়ে নদী থেকে পানি উঠিয়ে দেবার কথা বলেন তারা। কিন্তু প্রয়োজনের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পানি ঠিকমতো সরান না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান যে বেশিরভাগ বীজতলা এখনো পানির নিচে ডুবে গেছে। কিছু বীজতলা থেকে পানি নামলেও বীজতলা একদম নষ্ট হয়ে গেছে, আবার অনেক বীজতলার চারা নুইয়ে পড়েছে মাটিতে। তিনি জানান বীজতলার ক্ষতি কমাতে, কৃষি বিভাগের পরামর্শমতো পরিচর্যা করতে হবে।