আগের চেয়ে রাজশাহীতে টমেটোর আবাদ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমের শুরুতেই টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে রাজশাহী জেলায়। কৃষকরাও মৌসুমের শুরুতে টমেটোর ব্যাপক উৎপাদন হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় জানায়, টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে জেলায়। সাধারণত টমেটো চাষের মৌসুম ধরা হয় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। জেলার গোদাগাড়ী, পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলে আগাম টমেটোর আবাদ হয়।
টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে রাজশাহী জেলায়
আগের চেয়ে চলতি মৌসুমে ফলন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে এই কারণে।
রাজশাহী জেলায় প্রায় ৩৬ জাতের টমেটোর আবাদ হয়ে থাকে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় ৫ থেকে ৬ জাতের হাইব্রিড টমেটোর আবাদ।
দেশি ৫টি জাতের টমেটো থাকলেও এগুলোর তেমন আবাদ হয় না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে রাজশাহীতে টমেটোর মোট আবাদ ৩ হাজার ৬৬০ হেক্টর ছিল।
সেখান থেকে গড় ফলন ২২.৬ মেট্রিক টন ছিল।
মোট উৎপাদন ছিল ৮২ হাজার ৬২১ মেট্রিক টন।
তবে চলতি অর্থ বছরে ৩৬ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ৩৭.২৩ হেক্টর জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্তৃপক্ষ বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে ধারণা করছে ।
সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় ৪-৫ জাতের উচ্চফলনশীল টমেটো
রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি টমেটোর চাষাবাদ হয় গোদাগাড়ী, পবা ও বাগমারা উপজেলায়।
এসব অঞ্চলে মোট উৎপাদনের তিনভাগের দুই ভাগের বেশি টমেটো উৎপাদন হয়।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারিরা এসে জমি ধরে টমেটোর ক্ষেত কিনে নেন।
এরপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে ট্রাকে করে বিক্রি করেন।
এতে টমেটোর চাষে কৃষকরা রাজশাহী অঞ্চলে লাভবান হচ্ছে।
এর ফলে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষক টমেটোর চাষাবাদেও উৎসাহিত হচ্ছেন।
স্থানীয়ভাবে কৃষি অফিস জানায়, রাজশাহী অঞ্চলে প্রতিবছর ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন ছাড়িয়ে যায় টমেটো বেচা-কেনাকে কেন্দ্র করে।
প্রতি বিঘায় টমেটো উৎপাদন হয় ৬০ থেকে ৭০ মণ।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন সুলতানা।
তিনি জানান, সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (চার মাস) ধরা হয় টমেটো উৎপাদন মৌসুম।
এই অঞ্চলে দুবার করে টমেটো চাষ হয়।
বাজারে টমেটোর চাহিদা থাকায় টমেটোর বেশি দাম পাচ্ছেন চাষিরা।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেজেএম আব্দুল আউয়াল।
তিনি বলেন, এক কথায় টমেটো একটি অর্থকরী ফসল।
জেলায় গোদাগাড়ী, পবা ও বাগমারাতে সবচেয়ে বেশি টমেটো চাষ হয়।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে ৩৬ জাতের টমেটোর চাষাবাদ হয়।
কিন্তু উচ্চ ফলনশীল ৪ থেকে ৫ ধরনের টমেটোর চাষাবাদ বেশি।
বতর্মানে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।