ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা বর্ষণে বরিশাল বিভাগে কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্তত ৯০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। দুর্যোগের পর কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া হিসাব পর্যালোচনা করে। সেখান থেকেই ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করেছে। গতকাল শুক্রবার বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতির এই চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করে। কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হবার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অধিদপ্তর।
৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় টানা বর্ষণ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে টানা বর্ষণ শুরু হয়।
দক্ষিণ উপকূলে গত ৪ ডিসেম্বর থেকে কখনো ভারী, কখনো মাঝারি টানা বর্ষণ হয়।
৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকে।
বৃষ্টির কারণে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকার খেতের আমন ধানের গাছ নুয়ে পড়েছে।
ছড়া থেকে অনেক ধান খসে পড়েছে।
সেই সাথে বৃষ্টিতে পচে গেছে খেতের খেসারিগাছ।
এর বাইরে ক্ষতির মুখে পড়েছে মসুর, গম, আলু, তরমুজ, শর্ষে এবং বোরোর বীজতলাও।
আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর জমি
বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে জানা যায়, অসময়ের বৃষ্টিতে আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে বেশি।
অন্তত ২০ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া ১০ হাজার ১০৬ হেক্টর জমির খেসারি ওই বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে।
ক্ষতির তালিকায় আরো আছে ১০৬ হেক্টরের শীতকালীন শাকসবজি, ৫৩৩ হেক্টরের শর্ষে, ২০৬ হেক্টরের মসুর,৩৫ হেক্টরের গম, ১৫১ হেক্টরের আলু, ৬ হেক্টর তরমুজ এবং ৭৫ হেক্টরের বোরো বীজতলা।
সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে আর্থিক পরিমাণ দাড়ায় ৯০ কোটি টাকা।
কৃষকদের দাবি, সরকারি হিসাবের চেয়ে বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।
বিশেষ করে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ও খেসারির।
শুধু বরগুনাই একমাত্র জেলা নয়।
বিভাগের অন্যান্য জেলা সমূহেও আমন ও অন্যান্য ফসল এই অকাল বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দেখা যায় আমনের খেতের সব ধানগাছ শুয়ে গেছে। কোথাও কোথাও অবস্থা তো আরও বেগতিক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক মো. তাওফিকুল আলম।
তিনি বলেন,‘অকাল বর্ষণে খুব বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধান এবং খেসারির।
তিনি আরও বলেন তারা চূড়ান্ত যে হিসাব মাঠপর্যায় থেকে পেয়েছেন, তাতে আর্থিক হিসাবে তাদের মতে ৯০ কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।