মরিচ গাছে সঠিকভাবে সার প্রয়োগ করলে গাছের ভালো বৃদ্ধি, ফুল-ফল ধরা এবং উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। নিচে মরিচ গাছে সার দেওয়ার নিয়ম তুলে ধরা হলো:
১. জমি তৈরির সময় সার প্রয়োগ
জমি চাষের সময় মাটিতে প্রাথমিক সার মেশানো জরুরি। সাধারণত প্রতি বিঘায় নিম্নলিখিত পরিমাণ সার প্রয়োগ করা হয়:
- গোবর বা জৈব সার: ৫-৭ টন
- টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট): ৮০-১০০ কেজি
- এমওপি (মিউরিয়েট অফ পটাশ): ৫০-৬০ কেজি
- ইউরিয়া: ২০-৩০ কেজি (প্রাথমিক পর্যায়ে প্রয়োগ করা হয়)।
এই সারগুলো ভালোভাবে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে।
২. চারা লাগানোর পর সার প্রয়োগের নিয়ম
ক) প্রথম ধাপ (চারার ২০-২৫ দিন পর)
- ইউরিয়া: ২০ কেজি প্রতি বিঘা
- এমওপি: ১৫-২০ কেজি প্রতি বিঘা
এই সারের মিশ্রণ গাছের গোড়ার চারপাশে দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে ৫-৬ ইঞ্চি দূরত্ব রেখে সার প্রয়োগ করুন। প্রয়োগের পর পানি দিতে হবে।
খ) দ্বিতীয় ধাপ (৫০-৬০ দিন পর)
- ইউরিয়া: ২৫-৩০ কেজি প্রতি বিঘা
- এমওপি: ২০-২৫ কেজি প্রতি বিঘা
- জিঙ্ক সলফেট (যদি গাছের পাতায় হলুদ দাগ পড়ে): ২ কেজি প্রতি বিঘা।
গ) ফল ধরার সময়
- প্রতি গাছে এক চামচ পটাশ এবং দস্তা সার মিশিয়ে দিতে হবে।
- বোর্ন সলিউশন স্প্রে: ১ লিটার পানিতে ১ গ্রাম বোর্ন মিশিয়ে গাছে স্প্রে করা যায়।
৩. অতিরিক্ত পরিচর্যা
- পোকামাকড় দমন: যদি পোকার আক্রমণ দেখা দেয়, তবে কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
- ফোলিয়ার ফিডিং: মাটির সারের পাশাপাশি গাছের পাতায় তরল সার (যেমন: নাইট্রোজেন ফার্টিলাইজার) স্প্রে করা যেতে পারে।
৪. সারের প্রয়োগের সময়সীমা
- চারা লাগানোর ১৫-২০ দিন পর থেকে প্রতি ১৫ দিন অন্তর সার প্রয়োগ করতে পারেন।
- গাছের বৃদ্ধি, পাতা ও ফুলের অবস্থার ওপর নির্ভর করে সারের পরিমাণ সামঞ্জস্য করতে হবে।
৫. সতর্কতা
- সার প্রয়োগের পরপরই গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে।
- অতিরিক্ত সার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি গাছের ক্ষতি করতে পারে।
- জৈব ও রাসায়নিক সারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন।
সঠিক নিয়ম মেনে সার প্রয়োগ করলে মরিচ গাছ ভালো ফলন দেবে এবং চাষি লাভবান হবেন।