রোজার সম্পর্কে কুরআনের আয়াত ও হাদিসসমূহ
কুরআনের আয়াত
রোজা ফরজ হওয়ার নির্দেশ
📖 আল-কুরআন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
🔹 উচ্চারণ: ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানু কুতিবা আলাইকুমুস সিয়ামু কামা কুতিবা আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিকুম লা’আল্লাকুম তাত্তাকুন।
🔹 অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।”
📖 (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৩)
রমজান মাস ও কুরআন নাজিলের কথা
📖 আল-কুরআন:
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ
🔹 উচ্চারণ: শাহরু রমাদ্বানাল্লাযি উনজিলা ফিহিল কুরআনু হুদাল্লিন্নাসি ওয়া বাইয়্যিনাতিম মিনাল হুদা ওয়াল ফুরক্বান।
🔹 অর্থ: “রমজান হল সেই মাস, যাতে কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং সত্যপথের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে।”
📖 (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫)
রোজা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ হাদিস
1️⃣ রোজা গুনাহ মোচন করে
📜 রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
🔹 উচ্চারণ: “যে ব্যক্তি ঈমান ও নেক নিয়তে রমজানের রোজা রাখবে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।”
📖 (সহিহ বুখারি: ২০১৪, সহিহ মুসলিম: ৭৬০)
2️⃣ রোজাদারের জন্য জান্নাতের বিশেষ দরজা
📜 রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ
🔹 উচ্চারণ: “জান্নাতে একটি দরজা আছে, যার নাম ‘আর-রাইয়ান’। এই দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররাই প্রবেশ করবে।”
📖 (সহিহ বুখারি: ১৮৯৬, সহিহ মুসলিম: ১১৫২)
3️⃣ রোজা ঢালস্বরূপ
📜 নবী ﷺ বলেছেন:
الصِّيَامُ جُنَّةٌ، فَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ، فَلَا يَرْفُثْ وَلَا يَصْخَبْ، فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ، فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ
🔹 উচ্চারণ: “রোজা হলো ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে, সে যেন অশ্লীল কথা না বলে ও ঝগড়া না করে। কেউ যদি তাকে গালি দেয় বা মারামারি করতে চায়, সে যেন বলে: ‘আমি রোজাদার।'”
📖 (সহিহ বুখারি: ১৯০৪, সহিহ মুসলিম: ১১৫১)
4️⃣ রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ
📜 রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ، فَرْحَةٌ عِندَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِندَ لِقَاءِ رَبِّهِ
🔹 উচ্চারণ: “রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে: একটি আনন্দ সে পায় ইফতারের সময়, আর আরেকটি আনন্দ পাবে যখন সে তার প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করবে।”
📖 (সহিহ বুখারি: ১৯০৫, সহিহ মুসলিম: ১১৫১)
কুরআন ও হাদিসের আলোকে বোঝা যায়, রোজা শুধুমাত্র উপবাস থাকা নয়, বরং আত্মসংযম, তাকওয়া এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি অন্যতম ইবাদত। এটি মুসলমানদের জন্য ফরজ এবং গুনাহ মোচনের একটি বড় সুযোগ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমজানের রোজাগুলো যথাযথভাবে পালনের তৌফিক দান করুন। আমিন!