বস্তায় হচ্ছে আদাচাষ। এই আদা বিক্রয় করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। তাই কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় আদাচাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, যেসব কৃষকের আবাদি জমি নেই তারা ইচ্ছা করলে বসতবাড়ির আশেপাশে, আঙিনায়, সুপারি বাগান কিংবা অন্যান্য পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষ করতে পারেন। এক একটি বস্তায় ১টি করে বীজ আদা রোপন করে ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। বীজ লাগানোর সময় মাটি শোধন করে নিলে আদার মড়ক লাগার সম্ভাবনা কমে যায়।
উপজেলার পুটিকাটা গ্রামের কৃষক ইন্দ্রকমল রায় জানান, বছরের কয়েক মাস আদার দাম বেড়ে যায়। ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় আদা। তাই কয়েক বছর ধরে স্বল্পপরিসরে বস্তায় আদা চাষ করে পরিবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে।
তালতলা গ্রামের বিধান চন্দ্র রায় জানান, গত বছর ৫০টি বস্তায় আদা চাষ করে সফল হয়েছেন। এবারে শতাধিক বস্তাতে আদা লাগিয়েছেন। পরিবারের চাহিদার মেটানোর পরও বাড়তি আয়ের আশা করছেন তিনি।
মেকুরটারী গ্রামের সাজেদুল ইসলাম (৪০) পেশায় প্রভাষক হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন সময় কৃষি কাজ করে এলাকায় সুনাম অর্জন করেছেন। এই মৌসুমে তিনি অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বস্তায় আদা চাষ করেছেন।
তিনি জানান, অপেক্ষা নিচু জমিতে গত মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় আদা নষ্ট হয়ে যায়। এবারে কৃষি অফিসের পরামর্শে বস্তায় আদা চাষ করেছেন। দিন দিনে চারাগুলো পরিপক্ক হচ্ছে। দুধখাওয়া গ্রামের কৃষক আলহাজ্ব ফজলুল হক মন্ডল (৬০) এবছর ৬৫ শতাংশ জমির পাশাপাশি বস্তায় কয়েকটি চারা লাগালে চারাগুলো বেশ ভালো গজিয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শম্পা আক্তার জানান, আদা যেহেতু মসলা জাতীয় ফসল, প্রত্যেকেই যদি বসতবাড়িতে কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তা পদ্ধতিতে কিছু কিছু আদা চাষ করেন তাহলে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বাড়তি উপার্জন করতে পারবেন। কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মশালাগুলোতে এ ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।