Monday, 28 July, 2025

সর্বাধিক পঠিত

দিনাজপুরে লিচুর ফলন কম, দাম বেশি


বৈশ্বিক জলবায়ু উষ্ণায়নের প্রভাবে এবছর দিনাজপুরে লিচুর ফলন কম এবং পরিপক্কতে পুষ্ট কম হয়েছে বলে গেছে। এতে সব ধরনের লিচু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, এবার দিনাজপুর জেলায় ছোট-বড় নিয়ে ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির বাগান থেকে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর লিচুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৪.৯৭ মেট্রিক টন।

জানা গেছে, বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থি, কাঠালী আর দেশী লিচু এখন বাজারে। বৃষ্টির অভাব এবং প্রখর রোদে লিচুর জ্বলে গেছে রং, পরিপুষ্টতা সেভাবে হয়নি। এরপরেও বাজারে কদরের কমতি নেই।

আরো পড়ুন
রাক্ষুসী মাছ নিধনে ফসটক্সিন এর ব্যবহার এবং সতর্কতা

ফসটক্সিন (মূলত অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড) একটি অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক, যা ফসফিন গ্যাস উৎপন্ন করে। এটি সাধারণত গুদামজাত শস্যের পোকা দমন, ধান Read more

ভিয়েতনামের সিদা ৫৫৫ ধানে বাজিমাত নরসিংদীতে ‘স্মার্ট কৃষক’!

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পূর্বহরিপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রহমান আউশ মৌসুমে ভিয়েতনামি উন্নত জাতের 'সিদা ৫৫৫' ধান চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য Read more

বর্তমানে বাজারে প্রতি এক’শ লিচু বিক্রি হচ্ছে মাদ্রাজি ২০০-৩৫০ টাকা, বোম্বে ৩০০-৩৫০ টাকা, বেদানা ৪০০-৭০০ টাকা এবং চায়না-থ্রি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১১শ টাকায়। প্রতি বছর এই জেলায় চারশ’ থেকে সাড়ে চারশ’ কোটি টাকার বেশি লিচু বেচাকেনা হয়। দিনাজপুর সদর, বিরল, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুরের অধিকাংশ গাছে এবার ফলন কম। বোম্বাই লিচুর ফলন একেবারেই নেই।

পাইকারি বাজারে বিক্রি করেতে আসা লিচু চাষি খাদেমুল বলেন, অন্য বছরের চেয়ে এবার ফলন খুব কম হয়েছে। বাগানে আংশিক গাছে ফলন হয়েছে। বাগানে যা খরচ হয়েছে তা থেকে কিছুটা লাভ হবে। তবে বর্তমান বাজার ভালো। অন্য বছর এসময় যেখানে ১৫শ থেকে ১৭শ টাকা প্রতি হাজার বিক্রি করেছি, সেখানে এবার ২২শ টাকা দরে বিক্রি করলাম। খুচরা বাজারে ক্রেতাদের বেশি ভিড় রয়েছে। গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের দক্ষিণ প্রান্তে অস্থায়ী ফল প্রদর্শনী ও বিক্রয় বাজার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে চলে যাচ্ছে এসব লিচু।

এ অঞ্চলে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত করেছে ফল উৎপাদনে বলে জানান উদ্ভিদ বিষয়ক গবেষক, লেখক ও দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এমএসসির শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন।

তারা আরও বলেন, গত বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। ফলনের পরে যে হারে গাছে খাবার দরকার ও গাছের ব্যবস্থাপনা করা দরকার তা দেওয়া হয়নি এবং এ বছর আবহাওয়ার তারতম্য হয়েছে। ফল উৎপাদনের জন্য কার্বন ও নাইট্রোজেনের অভাব দেখা দেওয়ার ফলে গাছে মুকুল আসে না। তাই উৎপাদন কমে যায়। যদি কোনো বছর বেশি উৎপাদন হয়, তার পরের বছর গাছের প্রচুর খাদ্যের অভাব থাকে। ফলে উৎপাদনের ব্যাঘাত ঘটে। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় ফলন কম হয়েছে।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, খবার কারণে এবার লিচুর আকার বড় হয়নি। এবং ফলের যে বর্ণ সেটাও আসতে দেরি হয়েছে। তাই প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ৩০ শতাংশ ফলন কম হয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য লিচুর বাজার শহরের কালিতলা নিউ মার্কেট থেকে গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের দক্ষিণ প্রান্তে অস্থায়ী ফল প্রদর্শনী ও বিক্রয় বাজার স্থানান্তর করেছে জেলা প্রশাসন।

0 comments on “দিনাজপুরে লিচুর ফলন কম, দাম বেশি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ