সাগরে ইলিশ মিলছে না ভরা মৌসুমেও। ইলিশের পরিবর্তে সাগর থেকে হতাশা নিয়ে ফিরছে জেলেরা। জেলার বিভিন্ন মৎস্য বন্দরে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র। দ্রুত সময়ের মধ্যে সাগরে ইলিশের দেখা মিলবে বলে আশা করছেন মৎস্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্র এলাকায় সব ধরনের মাছ এবং চিংড়ি শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশের মৎস্য সম্পদের মজুত বৃদ্ধি করতে মোট ৬৫ দিন সমুদ্র এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় ।
গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২১ দিন সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ছিল এ নিষেধাজ্ঞা। একই সাথে থেকে আট মাস ধরে চলে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান, যা শুরু হয় নভেম্বরে।
ভরা মৌসুমেও সাগরে ইলিশ মিলছে না।
কিন্তু সরকারের নানামুখী উদ্যোগ থাকলেও সাগর মোহনায় পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মেলেনি। যদিও এখন এবার ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে । জেলেদের দাবি তাদের ট্রলারের জালানিসহ অন্যান্য খরচের টাকাই উঠছে না।
মহিপুর মৎস্য বন্দরের ট্রলার মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইলিশের ভরা মৌসুম জ্যৈষ্ঠ থেকে ভাদ্র পর্যন্ত। এ অঞ্চলের জেলেরা এই সময়ে ইলিশের শিকার করেন। কিন্তু এবছরের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা।
তিনি জানান প্রতিবার তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয় ট্রলার নিয়ে বের হলে। কিন্তু ফিরে আসার সময় তার অর্ধেক দামও আসছে না মাছ থেকে। এভাবে চললে খুব তাড়াতাড়িই ট্রলার মালিকেরা পথে বসবেন।
জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুসারে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৬৭ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে। সেই দিক থেকে ভাবলে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র একেবারে তার উল্টো।
মধ্যসাগরে যে মাছ পাচ্ছে তা দিয়ে জালানি এবং অন্যান্য খরচই আসছে না। ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌকাগুলো আগে দিনে দুইবার সাগরে মাছ শিকারে যেত। কিন্তু মাছ না থাকায় এখন একবারই যাচ্ছে সাগরে।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ থাকলেও বছরের শুরুতে টানা সাতমাস অনাবৃষ্টির কারণে ইলিশ গভীর সাগর থেকে এখনও তীরের দিকে ফেরেনি।
বৃষ্টিপাত বেড়ে পানির লবণাক্ততা কিছুটা কমলে কাছাকাছি সময়ের মধ্যে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করবে।