শিম বা মটরগোত্রীয় গাছ হল বকফুল গাছ। গাছ এর গড়ন মোটেই শিম বা মটরের মত নয়। কিছুটা মিল ফুলের গড়নে আছে। পাতা ও গাছের সাথে কোন প্রকার মিল নেই। বকফুল মাঝারি আকারের ঝাড়জাতীয় বৃক্ষ। ফুলের আকার-আকৃতি বকের ঠোঁটের মতো। একারণে বোঁটায় ঝুলে থাকা এ ফুলের নামকরণ করা হয়েছে বকফুল। মূলত বকফুল সবজি হিসেবে অতি উত্তম। এটি মুখরোচক, সুস্বাদু, পুষ্টিকর ফুল। চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে সহজেই বকফুল গাছের চাষ করা যায়।
মাটি ও জলবায়ু
বকফুল নিরক্ষীয় অঞ্চলের গাছ। এই গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা। বাৎসরিক ২০০০-৪০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত এই গাছের জন্য খুব ভাল । পাহাড়ি অঞ্চলে এটি ভাল জন্মায়। ছায়াপ্রদানকারী গাছ হিসেবে পাহাড়ি অঞ্চলে সারি করে লাগানো হয়। খরা প্রবণ অঞ্চল গুলোতে এই গাছ লাগিয়ে খুব দ্রুত জমিকে সবুজ আচ্ছাদনে ঢেকে ফেলা যায়।
বকফুল গাছ যেকোনো মাটিতে খুব সহজেই জন্মায়। কিন্ত মাটির ধরন যেমন বেলে, দোআঁশ, অনুর্বর, লবণাক্ত, ক্ষারীয়, আম্লিক ইত্যাদির ওপর গাছের বৃদ্ধি নির্ভর করে। রাস্তার ধারে, ধান জমির আল বরাবর, লাগানো হলে ভালো উপকার পাওয়া যেতে পারে।
চারা তৈরি
বীজ থেকে সহজে চারা তৈরি করা যায়। শরৎ কাল থেকে হেমন্ত কালে বকফুল ফোঁটে। বসন্তকালে ফোঁটা ফুলের বীজ হয়। বীজ বীজতলায় বুনে চারা তৈরি করতে হবে। গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকাল চারা লাগানোর জন্য খুব উত্তম সময়।
গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে যত দ্রুত সম্ভব বীজ মাটিতে বপণ করতে হবে। ঠিকমত যত্ন ও পরিচর্যা করলে কার্তিক মাস থেকেই ফুল আসতে শুরু করে।
কিভাবে চারা লাগানো হয় ও পরিচর্যা
চারা সারি করে রোপন করতে হবে। প্রতিটি চারার দুরত্ব হবে ২ মিটার দূরে দূরে। ৩০ সেন্টিমিটার মাপের গর্ত করে নিতে হবে। গর্তের মাটিতে শুধু জৈব সার মিশিয়েই চারা লাগানো হয়। রোপণের পর ফুল আসতে সর্বোচ্চ এক বছর সময় লাগবে। কেবল বীজ বপণ করেও সেখানে গাছ তৈরি করা যায়।
বর্ষাকালে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। সেচ দিলে গাছ বাড়ে।
গাছে খুব বেশি সারের প্রয়োজন হয় না।, গাছের বৃদ্ধি বর্ষা কালে ভাল হয়। নিয়মিত ছাটাই করতে হয়। তাছাড়া প্রতিনিয়ত আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।