এখন শীতকালীন সবজিতে ঢাকা যশোর এর বিস্তীর্ণ মাঠ। সবজির জন্য বিখ্যাত এই জেলা। মাঠগুলোতে যেদিকে চোখ যায় নানা সবজির সমারোহ দেখা যায়। বাজারে এরই মধ্যে ওঠা শুরু করেছে কিছু সবজি, যার দামও প্রায় দ্বিগুণ। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
অবশ্য ক্রেতারা পড়েছেন সংকটে।
দাম দ্বিগুণ হওয়ায় নতুন ওঠা সবজি কেনার ইচ্ছা থাকলেও তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার অনেকটাই বাইরে।
সবজি চাষিদের ভাষ্যমতে, বর্তমানে অল্প পরিমাণে বাজারজাত হচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, টম্যাটো, পালংশাক।
মৌসুমের এগুলো আগে চাষ করা হয়।
এ সবজি চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হবার কারণে দাম বেশি।
এ ছাড়া উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বর্ষার কারণে।
সেটিও দাম বেড়ে যাবার একটি কারণ।
মাসখানেক পর আরও সবজি উঠলে দাম কমবে বলে তারা জানান।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে খোজ নিয়ে জানা যায়, রবি মৌসুম শুরু হয়েছে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মাঝা মাঝিতে।
এ সময় আবাদ শুরু হয় শীতকালীন সবজির।
এই মৌসুম চলবে আগামী বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
তবে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা সবজির অতিরিক্ত দামে দিশাহারা।
তারা সাধারণ সবজিও কিনতে পারছেন না।
শীতকালীন সবজির সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বেড়েছে অন্য সবজির দামও।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উদ্যান বিশেষজ্ঞ ফয়েজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, সবজির দাম মৌসুমের শুরুতে একটু বেশি থাকে।
উৎপাদন কম হবার কারণে এ সময় সবজির দাম বেড়ে যায়।
মাসখানেক পরে উৎপাদন বাড়বে, তখন সবজির দাম স্বাভাবিক হবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর খুলনা বিভাগের ৬ জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৩ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে।
২ নভেম্বর পর্যন্ত ১৭ হাজার ৩২১ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে।
এর মধ্যে যশোর জেলায় ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
এর বিপরীতে চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৩২০ হেক্টরে।
মাগুরায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমি।
এর বিপরীতে সবজি চাষ হয়েছে ৩৩০ হেক্টর জমিতে।
কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫১০ হেক্টরে।
চুয়াডাঙ্গায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে।
এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৬০ হেক্টর।
মেহেরপুরে ৪ হাজার ৫০০ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে।
কৃষি কর্মকর্তাদের মারফত জানা যায় যে, শীত মৌসুমের শুরুতে নানা ফসলের কারণে সব জমিতে সবজি চাষ শুরু হয় না।
কিছুদিন পর চাষিরা অনেক জমিতে সবজি চাষ শুরু করবেন।
গত বছর বিভাগে ৫০ হাজার ২৩ হেক্টর জমি সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
এ বছর ৫১ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়।