Friday, 03 January, 2025

সর্বাধিক পঠিত

চুয়াডাঙ্গায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি


চুয়াডাঙ্গায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

চুয়াডাঙ্গায় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জেলায়। পাশাপাশি বেশির ভাগ বসতবাড়ি ও দোকানের টিনের চাল এর কারণে ফুটো হয়ে গেছে। উঠতি ফসলের উপর এমন দূর্যোগ ও ক্ষয়-ক্ষতিতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে গেছেন। শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি র কারণে লোকসানের মুখে জেলার চাষিরা।

আমের মুকুলেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে

একদিকে লোকসান, অন্যদিকে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আরো পড়ুন
টবে পুঁইশাক চাষ পদ্ধতি

পুঁইশাক (English name: Malabar spinach) একটি জনপ্রিয় সবুজ শাক, যা বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং সহজে চাষযোগ্য। এটি মূলত গ্রীষ্মকালীন শাক Read more

কোয়েল পাখি (quail birds) পালন পদ্ধতি

কোয়েল পাখি পালন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, কারণ এটি অল্প জায়গায় এবং কম খরচে করা যায়। নিচে কোয়েল পাখি Read more

ফাল্গুনের এ সময়টা মোটেও ভালো কাটছে না জেলার কৃষকদের।

এত বড় ক্ষতি কৃসকরা কীভাবে পোষাবেন সেই চিন্তায় নির্ঘুম কাটছে তাদের সময়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ঋণ নিয়ে বিঘার পর বিঘা জমিতে চাষ করেছেন।

তারা ভুট্টা, গম, তামাক, মসুর, কুল, তরমুজ, পানসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করেছিলেন তাদের জমিতে।

কিন্তু ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে খেতের সব ভুট্টাগাছ ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে।

যার কারণে জমিতে নতুন করে ভুট্টা চাষের আর কোনো সুযোগ নেই এ বছর।

এমনকি আমের মুকুলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

অন্যদিকে বিভিন্ন কারণে ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

ঋণ পরিশোধ নিয়েই তারা চিন্তিত

এনজিওর ঋণ এবং লোকজনের ধার পরিশোধ করাই এখন তাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাদের কেউ কেউ ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দেখে সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া ও কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এমন শিলাবৃষ্টি চুয়াডাঙ্গাবাসী এর আগে দেখেনি।

কৃষকদের ফসলের এমন ক্ষয়ক্ষতিও আগে কখনো দেখা যায়নি।

চুয়াডাঙ্গায় কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার হাজার হাজার কৃষকের প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার ৪৯৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এতে টাকার পরিমাণে ১০৮ কোটি টাকার বেশি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলায় ৪৪ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।

আর শিলাবৃষ্টিতে ১৩ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

৯৯৫ হেক্টরের গম এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ৫৫ হেক্টর।

বোরো ধান ১ হাজার ৪৭০ হেক্টর, কলা ১৫৩ হেক্টর, পেঁপে ৯৫ হেক্টর, পেঁয়াজ ৩৫ হেক্টর, মসুর ২৩৪ হেক্টর ও রসুন ২০ হেক্টর জমির ফসলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

তা ছাড়া পানবরজ, তরমুজ, পেয়ারা, লিচু, তামাক, ধনেপাতা ও শাকসবজির জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে আশার কথা হচ্ছে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কম হয়েছে ধান।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার তালহা জুবায়ের মাসরুর।

তিনি বলেন, শিলাবৃষ্টির পর ফসলের মাঠ তিনি পরিদর্শন করছেন।

সদর উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন হয়েছে।

সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভুট্টা পাশাপাশি তরমুজ, কুল, আমের মুকুলেও ক্ষতি হয়েছে অনেক।

তবে তুলনামূলক কম হয়েছে ধানের ক্ষতি।

তাদের অনুমান সদরের ছয় ইউনিয়নে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আব্দুল মাজেদ।

তিনি বলেন, মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে ফসলের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।

এমন ক্ষতি আগে কখনো চুয়াডাঙ্গাবাসী দেখেনি।

0 comments on “চুয়াডাঙ্গায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *