পুরো ক্ষেত সবুজ লাউয়ের লতায় ছেয়ে গেছে। সবুজ পাতার ফাঁকে লতাজুড়ে ধরেছে লাউ। ফুল আর নতুন কুঁড়ি গজাচ্ছে কিছু কিছু লতায়। মৌলভীবাজার রাজনগরের টেংরা ইউনিয়ন। এখানে ডেফলউড়া গ্রামের লেচু মিয়ার লাউ চাষ এখন লোকমুখে। তার সবজি ক্ষেতে গেলে এমন চিত্রই চোখে পড়বে।
এই লাউ চাষে লেচু মিয়ার ভাগ্য বদলে গেছে।
করোনাকালে অভাবে পড়ে তিনি ৩ মাসের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তিনি।
কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে ১ বিঘা চারা ভূমিতে লাউ চাষ শুরু করেন।
এতে মাত্র ৭ হাজার টাকা খরচ করেছেন তিনি, দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন।
তার মতে আরো লাভের আশা রয়েছে তার।
লাউ চাষের পাশপাশি তিনি বরবটি, শসা ও বেগুন বিক্রি করছেন।
এতে তিনি স্বাচ্ছন্দে আছেন পরিবার পরিজন নিয়ে।
কৃষি বিভাগ সুত্র জানায়, করোনাকালে পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় প্রর্দশনী দেয়া হয়। এতে লেচু মিয়াকে লাউ চাষে উৎসাহিত করা হয়।
বর্তমানে সে আত্মনির্ভরশীল।
নিজ উদ্যাগেই তিনি এখন চাষ করে যাচ্ছেন।
সে চাষাবাদের অভিনব কৌশল রপ্ত করেছেন তিনি।
বিভিন্ন জাতের শাক সবজি চাষ শুরু করেছেন সেগুলো পুজি করে।
করোনাকালে লেচু মিয়া ৩ মাসে ৫০০টি লাউ উৎপাদন করেছেন।
১৬ হাজার টাকার লাউ বিক্রয় করেছেন।
এখনও অব্যাহত আছে লাউ উৎপাদন।
লেচু মিয়া জানান যে, লাউ ছাড়াও এ মৌসুমে ২০ হাজার টাকার বেগুণ, বরবটি, শসাসহ অন্যান্য শাক-সবজি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
অনুকূল আবহাওয়া যদি থাকে এবং ঠিকমত বাজারজাত যদি করতে পারেন তাহলে, ৪ মাসে ৩০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।
এখন তাকে অনুসরণ করে এলাকার অনেকেই।
শাক-সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এলাকার যুবকেরাও।
লেচু মিয়া জানান, বিভিন্ন জাতের শাক-সবজিতে রাসায়নিক কীটনাশক ও সার ব্যবহারের মাত্রা বেড়ে গেছে।
মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক এই সকল কীটনাশক।
নিরাপদ সবজি খাব মানুষ যেন এ কথা অনেকটাই ভুলে গিয়েছে।
লেচু মিয়ার নিজের কোন জমি নেই।
করোনাকালে সব কিছু স্থবির হয়ে গেলে অভাবে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
তিনি আরও জানান স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে প্রাকৃতিক জৈব পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেন তিনি।
বীজ,সার ও ফাঁদ নিয়ে কৃষি বিভাগ তার পাশে দাঁড়ায়।
এখন লাভের পথে আছেন বলে লেচু মিয়ার মুুুখ উজ্জ্বল হয়ে আছে।
রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ইফফাত আরা ইসলাম।
তিনি বলেন, লাউ চাষ করে লেচু মিয়া অল্প দিনে সফল হয়েছেন।
করোনাকালে পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী দেয়া হয়।
লেচু মিয়াকে তারা লাউ চাষে উৎসাহিত করেন।
তাকে আত্মনির্ভরশীল হতে কৃষি বিভাগ সব সময় সঠিক পরামর্শ দিয়ে আসছে।
মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক কাজী লুৎফুল বারি।
তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় প্রর্দশনীতে চাষিদের লাউ চাষে উৎসাহিত করা হয়। যাতে আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেছে।