কুমিল্লার মুরাদনগরে রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ করেছেন কৃষকরা। উন্নত জাতের এসব সরিষার বাম্পার ফলন দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। স্বল্প সময়ে উৎপাদনশীল ও একটি লাভজনক রবিশষ্য এই সরিষা। এ কারণেই এলাকায় সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। চলতি বছর গত বছরের তুলনায় প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আর রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ এর কারণেই কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা
কৃষি বিভাগের দাবি, আমন ফসল ঘরে তোলার পর স্বল্প সময়ে সরিষা চাষ করা সম্ভব হয়।
লাভজনক ফসল হওয়ায় কৃষকরা এ ফসল চাষে ঝুঁকছেন।
শেষ পর্যন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে তবে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা প্রকাশ করেছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগ সূত্র মারফত জানা যায়, মুরাদনগরে ২৪ হাজার হেক্টর চাষাযোগ্য জমি রয়েছে।
যার মধ্যে গত বছর মাত্র ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল।
এই বছর সে হিসেবে উপজেলায় ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু এর বীপরিতে আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৬১৭ হেক্টর জমিতে।
বিভিন্ন জাতের সরিষা করিমপুর, ইউছুফনগর, দিলালপুর, নেয়ামুতপুর, নোয়াগাঁও, কামাল্লা, রামচন্দ্রপুর, শ্রীকাইল, রোয়াচালা, কুড়াখাল, কুড়ন্ডি, বড়িয়াচরা, মোহাম্মদপুর, দিঘিরপাড়, রগুরামপুর, পুষ্কনিরপাড়, চৈনপুর, মোচাগড়া, দেওরাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চাষ হয়েছে।
প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ৭ থেকে ৮ টন সরিষার উৎপাদন হবে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ এবছর অনুকূলে রয়েছে।
তাই চলতি মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় সরিষা চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে।
এতে কৃষকরাও তাদের ফলনে বেশ আনন্দিত হয়েছেন।
স্থানীয় কৃষক আলতাফ আলীও এবার সরিষার চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসারদের পরামর্শে বোরো ধানের আগে সরিষার চাষ করেছেন।
প্রায় ১০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করা এ কৃষকের প্রতি বিঘায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
বিঘা প্রতি ৮ মণ সরিষা পাবেন বলে আশা করেন এই কৃষক।
যার বর্তমান বাজার মূল্য ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা হবে বলে তিনি জানান।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, কৃষকরা যেন অধিক লাভবান হতে পারে সেজন্য ‘বারি ১৭’ এর চাষাবাদ করছেন।
পাশাপাশি প্রায় ৩০০ চাষিকে সুপার কোয়ালিটি ‘বারি ১৮’ জাতের সরিষার বীজ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ সেবা দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
সরিষা কৃষকের স্বপ্ন পূরণ করবে।
পাশাপাশি এটি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কৃষি বিভাগ আশা করছে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে।