রাজশাহীতে মাল্টা চাষে পাল্টে যাচ্ছে হাজার মানুষের জীবিকা। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল মাল্টার উৎপাদন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
রাজশাহীর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় দিনে দিনে মাল্টা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে এ ফলের চাষে রাজশাহী জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলাতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ভাগ্য বদলে গেছে অনেক বেকার যুবকের।
মিষ্টি ও ফলন বেশি হওয়াতে জেলায় সবচেয়ে বেশি মাল্টার চাষ হচ্ছে বারি মাল্টা-১।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও ফল গবেষণা কেন্দ্রের সূত্র মতে, রাজশাহীতে মাল্টার প্রথম চাষাবাদ শুরু হয় ২০১৫ সালে এবং বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু ২০১৭ সালে।
চলতি বছরে রাজশাহীতে মোট ১৪৮ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। ২০১৯ সালে চাষ হয়েছিলো ১১৮ হেক্টর জমিতে।
জেলায় বাগান আছে আনুমানিক ৩৩০ টি। গত বছর মাল্টার উৎপাদন হয়েছিলো ১৬০ মেট্রিকটন। এ বছর হয়েছে ১৯০ মেট্রিক টন।
বাগান থেকে ৮০ টাকা ও ১০০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে আবাদ হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টন মাল্টা।
অনেকে অন্য পেশার পাশাপাশি মাল্টা চাষ করছেন। এমন একজন মহানগরীর বোয়ালিয়া কৃষি কর্মকর্তা ফাহামিদা নাহারের নগরীর তেরখাদিয়ায় তার এক বিঘার ৮০ টি মাল্টা গাছের বাগান রয়েছে। তিনি জানান গতবছর মোট এক লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইতিহাস বিভাগের সাবেক ছাত্র হাফেজ মশিউর রহমান। তিনি পুঠিয়া উপজেলার একটি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি দেড় বিঘা জমিতে মাল্টার আবাদ করেছেন।
এ বছর বাণিজ্যিকভাবে মাল্টার বাগান করে লাভের মুখ দেখেছেন জেলার পুঠিয়া, পবা, মোহনপুর, তানোর ও গোদাগাড়ীর অনেক শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা। পাঁচ বছরে রীতিমত নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন অনেকে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বলেন, ‘রাজশাহীর অনেক বেকার যুবক এখন মাল্টা চাষে ঝুঁকেছেন। ফলের চাষ করে দামও ভালো পাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ জেলায় এ ফলের চাষ বাড়ছে। আমরা নিয়মিত চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।’
চাষিরা বলছেন এভাবে মাল্টা চাষ করতে পারলে এবং আবাদ আরো বাড়লে দেশের চাহিদা পূরন করে বাইরের দেশেও রফতানি করা যাবে।