
কুমিল্লা জেলায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে তুলা চাষ, যা জেলার কৃষিক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর ইউনিয়নের রাজারখলা এলাকার কৃষক আবু তাহের এই পরীক্ষামূলক তুলা চাষের পথিকৃৎ। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সার্বিক সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তায় এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সফল হতে চলেছে।
উদ্যোগের সূচনা
গত শুক্রবার (১৫ আগস্ট) তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কারিগরি সহায়তা ও প্রণোদনায় কৃষক আবু তাহেরের ৩৩ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে তুলা চাষের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এই উদ্যোগকে সফল করতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড তাকে সিবি হাইব্রিড-০১, ডিএম-০৪ এবং রুপালি-০১—এই তিন ধরনের উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করেছে। পরবর্তীতে সার ও কীটনাশক দিয়েও সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
কৃষকের প্রত্যাশা ও বোর্ডের পরিকল্পনা
কৃষক আবু তাহের জানান, কুমিল্লায় এর আগে কেউ তুলা চাষ না করায় শুরুতে কিছুটা ভয় ছিল। কিন্তু তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উৎসাহ ও প্রশিক্ষণ তাকে সাহস জুগিয়েছে। তিনি বলেন, “যদি এই ৩৩ শতক জমিতে ভালো ফলন হয়, তাহলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে তুলা চাষ করব।”
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় পরীক্ষামূলক চাষ সফল হলে আগামী মৌসুমে এই অঞ্চলে আরও বিস্তৃত আকারে তুলা চাষ সম্প্রসারণ করা হবে। বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমীন জানান, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে তুলা আমদানি করতে হয়। নতুন নতুন এলাকায় তুলা চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে এই আমদানিনির্ভরতা কমানো সম্ভব। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, কুমিল্লার আবহাওয়া ও মাটি তুলা চাষের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। দ্রুতই কুমিল্লায় তুলা উন্নয়ন বোর্ডের একটি অফিস স্থাপন করা হবে, যা স্থানীয় তুলা চাষিদের জন্য সহায়ক হবে।
অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত গুরুত্ব
কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তুলা চাষ কেবল অর্থনৈতিকভাবেই লাভজনক নয়, বরং পরিবেশ ও মাটির ভারসাম্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে পতিত জমিগুলোতে তুলা চাষ সম্প্রসারণ করা হলে কৃষকরা আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হবেন। এছাড়াও, একই জমিতে তুলা চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের সবজিও উৎপাদন করা সম্ভব, যা কৃষকের আয় বাড়াতে সাহায্য করবে।