মুরগি বাঁচাতে এবং পালকের অপব্যবহার কমাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন থাইল্যান্ডের এক যুবক। পালক দিয়েই মাংসের মতো পুষ্টিকর খাবার বানানো যেতে পারে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, মুরগির শরীরের সাধারণত মাংসের অংশ এবং হাড়ের আশেপাশের অংশ খাওয়া হয়ে থাকে। বাকি থাকা পালক এবং অন্যান্য অংশ ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই, মুরগির পালকেও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যা খাওয়া যেতে পারে।
বিশ্বের নানা প্রান্তেই মাংসের পরিবর্তে মাংসের মতো স্বাদের জিনিস খাওয়া চালু হয়েছে। মাংসের স্বাদযুক্ত খাবারগুলো খেতেও একদম মাংসের মতোই হয়। এর ফলে বিভিন্ন পশু-পাখি বেঁচে যেতে পারে, এমন ধারণা থেকেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।
রয়টার্সর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোরাউত কিত্তিবানথর্ নামের ওই যুবক পড়াশোনার জন্য ছিলেন লন্ডনে। সেখানে সদ্য মেটেরিয়াল ফিচার্সের উপর স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করেছেন তিনি। লন্ডনে থাকাকালীন সোরাউত দেখেন, প্রতি বছর ইউরোপে ২.৩ মিলিয়ন টন মুরগির পালক বের হয়। সেগুলিকে যদি কাজে লাগানো যায় খাবার হিসেবে, তা হলে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে সমস্যা হয় না। তখনই তার মাথায় আসে এই বিষয়টি।
পড়া শেষ করে লন্ডন থেকে থাইল্যান্ডে ফেরার পর তিনি এই কাজে হাত লাগান। মুরগির পালক থেকে প্রোটিনজাতীয় কিছু বানানোর চেষ্টা করেন। যা সহজেই প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খাওয়া যায়। এর জন্য তিনি প্রথমে পালক নিয়ে তার পুষ্টিকর অংশগুলি বেছে তা মিক্সারে গুঁড়ো করেন। তারপর সেই পাউডারকে প্রোটিন খাবারে পরিণত করেন।
এ বিষয়ে সোরাউত বলেন, মুরগির পালকে প্রচুর প্রোটিন থাকে। একে যদি বিশ্বের সামনে তুলে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হিসেবে তুলে ধরা যেতে পারে, তা হলে এর চাহিদা কিন্তু প্রচুর থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এশিয়ার দেশগুলোতে এই ফেদার ওয়েস্টের পরিমাণ আরো অনেক বেশি। তাই যদি কিছুটাও ওয়েস্ট এই ভাবে কমানো যায়, তা হলে অনেকের সাহায্য হতে পারে।
তবে, এ ক্ষেত্রে আরো গবেষণা প্রয়োজন। শুধু তাই নয় এই মুহূর্তে তার আর্থিক সাহায্যেরও প্রয়োজন। কারণ প্রোডাক্ট হিসেবে বাজারে বিক্রি হতে আরো অনেক পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াসহ একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখতে হবে। ফলে তার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।
যারা এরইমধ্যে এই প্রোডাক্ট টেস্ট করেছেন, তারা জানাচ্ছেন স্বাদের দিক থেকে ভালোই এই প্রোটিন পাউডার। অনেকেই বলছেন, এটা এমন একটা জিনিস যা খেয়ে বা দেখে সহজে কেউ বলতে পারবে না চিকেন ফেদার বা মুরগির পালক দিয়ে তৈরি হয়েছে। এই পাউডার দিয়ে বানানো মিট বল খেলেও সেটা কী ভাবে তৈরি হয়েছে তা বোঝার উপায় থাকবে না, বলছেন অনেকেই!