ঝিনাইদহে এখন আমনের ভরা মৌসুম। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এবার সেখানে রোপা আমনের চাষ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ২৭ হাজার ৬৭২ টন ধরা হয়েছে । কিন্তু মাজরা পোকার আক্রমণে অতিষ্ঠ এ অঞ্চলের কৃষক।
কৃষকরা এখন লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত। তবে মাজরা পোকার আক্রমণ বেড়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন এটি ঠেকাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তারা জানিয়েছেন যে এবার এই পোকা কোনোভাবেই দমন করা যাচ্ছে না।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাদের দাবি, মাত্র ৫৫ হেক্টর জমিতে মাজরা আক্রমণ করেছে। কিন্তু এতে দ্বিমত পোষণ করছেন কৃষকেরা। স্থানীয় সংবাদকর্মী, সদরভিত্তিক কৃষকদের সংগঠন ‘স্বাধীন কৃষক সংগঠন’ এবং বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের দাবি, মাজরায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্তত ১৫ হাজারের বেশি হেক্টর জমির ধান।
মাজরা পোকার আক্রমণে অতিষ্ঠ
ধানগাছ আবাদের কিছুদিনের মধ্যেই মাজরা পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। যার কারণে বেশির ভাগ ধানগাছের পাতা মরে হলুদ রং ধারণ করেছে। প্রায় পাতাশূন্য হয়ে মাটিতে মিশে যাচ্ছে কোনো কোনো জমির ধানগাছ। বারবার কীটনাশক প্রয়োগের পরেও সুফল মিলছে না।
উত্তর মির্জাপুর গ্রামের কৃষক সোহেল আহম্মেদ জানান যে, ধান লাগানোর পর যখন থেকে কুশি ছাড়তে শুরু করেছে মাজরা পোকা আক্রমণ শুরু করেছে তখন থেকেই।
পার্শ্ববর্তী গ্রাম বাখরবার কৃষক মানিক মিয়া গত ৫০ বছর ধরে চাষ করে আসছেন। কিন্তু এবার যেভাবে মাজরা পোকা ধরেছে তেমন করে কোনো দিন দেখেননি। তিনবার ওষুধ দেবার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না।’
নবগ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম এর মতে আমনের গাছে এবার বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। এমন মারাত্মক আক্রমণে ওষুধ বিক্রেতাদের পরামর্শ নিয়েছেন। প্রয়োগ করেছেন ফুরাডান, ভিরতাগো, আলটিমা প্লাস। কিন্তু কোনো উপকার পাচ্ছেন না। তিনি অভিযোগ করেন যে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকেও কোনো পরামর্শ তারা পাচ্ছেন না।’
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হয়। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান যে, মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে মাত্র ৫৫ হেক্টর জমিতে। বিক্ষিপ্তভাবে পোকার আক্রমণ হয়েছে বিভিন্ন উপজেলায়। তবে তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে বলেই তিনি মনে করেন।
এছাড়া মাঠকর্মীরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে তিনি জানান। তার মতে, তাদের লোকসান হবে না।