এগ্রোবিডিঃ সামনেই ঈদ-উল-আযহা। আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি করতে উদগ্রীব ধর্মপ্রাণ মুসলিম। সেই সাথে প্রস্তুতকৃত পশু বিক্রয় করার জন্য তৈরি পশুব্যবসায়ীরা । কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এই পশু বিক্রয় বা পশু ক্রয় করা দুটোই ঝুকিপূর্ণ। অপরদিকে স্বাস্থ্যবিভাগ ভাবছে এই হাটে যে জনসমাগম হবে, তাতে সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে পারে।
তবে চট্টগ্রাম স্বাস্থ্যবিভাগের এমন চিন্তাকে দূর করে দিয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর শিক্ষার্থীরা। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে হওয়া গরুর হাটের জন্য তারা স্বাস্থ্যসম্মত পশুর হাট বসানোর নকশা তৈরি করেছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এই নকশা অনুমোদন তো করেছেই, একই সাথে তা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ইজারাদারদের ইতিমধ্যে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। আর তাদের এই নির্দেশনা দিয়েছে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এতে হয়তো পুরোপুরি সুরক্ষা হবে না, তবে সংক্রমন অনেকটা নিয়ন্ত্রন করা যাবে। তাদের মতে উপস্থাপিত পশু হাট এর মডেল অনুযায়ী যদি এর কিছু অংশও যদি বাস্তবায়ন করা যায় তবে অনেকটা সুফল পাওয়া যাবে।
প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা জানিয়েছেন এই মডেলের কিছু অংশ বাস্তবায়ন করবেন ইজারাদার আর বাকি অংশ বাস্তবায়ন করবে সিটি করপোরেশন।
সৈয়দ ইমাম, ফারহান আরিফ রহমান ও তাসফিয়া তাসনিম- এই তিন চুয়েটের শিক্ষার্থী তৈরি করেন এই নকশা। তাদের সহযোগিতা করেছেন স্থাপত্য বিভাগের অম্লান বিশ্বাস ও পুরাকৌশল বিভাগের রাকিব উদ্দিন চৌধুরি।
এই নকশায় প্রবেশের ও বের হবার একাধিক পথ রয়েছে। প্রত্যেক পথে থাকবে জীবাণুনাশক চেম্বার। ভেতরে থাকবে বর্গাকার গরু প্রদর্শনের ব্লক, আর ব্লকসমূহের মাঝে থাকবে বিক্রেতাদের দাড়ানো আর গরুর খাবার জায়গা। বাশ দিয়ে বক্স আকারের একটি স্থান চিহ্নিত থাকবে, যেখানে দাড়িয়ে ক্রেতা দরদাম করবে, যেখানে কমপক্ষে ১০ ফুট দুরত্ব থাকবে। এভাবে ব্লকে দাড়িয়ে ২০-৫০ জন লোক সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে গরু দেখে কেনা-বেচা করতে পারবেন। তাছাড়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হাত ধোবার ব্যবস্থা থাকবে প্রতি ব্লকেই। নকশা নির্মাতারা বলেন তিন স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুরক্ষা বিধিসমূহ।
চসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, এই নকশা কোনক্রমে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা গেলে সংক্রমন অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে। তবে ইজারদারদের সহযোগিতা ছাড়া সেটা সম্ভব হবে না বলেও তিনি মনে করেন। কারন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে যেহেতু বাজার বসেছে এবার সেহেতু কোন হেলাফেলা করার সুযোগ নেই।