নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সাবদী গ্রাম। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরঘেঁষা এই গ্রামে যত দূর চোখ যায় শুধু ফুলের সমারোহ। দেশের বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে সেখানে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন ফুলচাষিরা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে চাষ কম হয়েছে এ বছর। তাই লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন ফুলচাষিরা। কৃষকরা জানান অসময়ের বৃষ্টির কারণে চাষ কম করতে পেরেছেন তারা। বছরের সকল দিবসে তাই হয়ত তারা ফুল সরবরাহ করতে পারবেন না।
বিশেষ দিনগুলো ঘিরে প্রতিবছর ফুলের চাষ করা হয়
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, বন্দর উপজেলার ও সোনারগাঁ উপজেলার ১০টি গ্রামে প্রতিবছর বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করা হয়।
কয়েক হাজার নারী-পুরুষ স্বাবলম্বী হয়েছেন ফুল চাষে।
গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা গ্লাডিওলাস, জারবেরা, বাগানবিলাস, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, কসমস, দোলনচাঁপা, নয়নতারা, মোরগঝুঁটি, কলাবতী, বেলি, জিপসি, চেরি, কাঠমালতি, আলমন্ডা, জবা, রঙ্গন, টগর, রক্তজবাসহ বাহারি রঙের ফুল চাষ হয়।
এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষ করে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে তারা প্রতিবছর ফুলের চাষ করেন।
কিন্তু বিভিন্ন কারণে বর্তমানে ফুলচাষিদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
তার উপর অসময়ের বৃষ্টির কারণে ফুলের চাষ কম হবার কারণে চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েছেন।
এদিকে এসব গ্রামের বাহারি ফুল দেখতে শীতলক্ষ্যা নদী পার করে প্রতিদিনই হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছেন।
ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং পরিবার নিয়ে ভাল সময় কাটাতে তারা আসছেন ফুলের বাগানে।
বন্দরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সিমা মণ্ডল।
তিনি জানান, আগের বছর করোনা মহামারির কারণে অনেক ফুলচাষি কমে গেছেন।
একই সাথে জমিতে পানি থাকার কারণেও অনেক ফুলচাষি কমেছে।
এ বছরেও বৃষ্টিসহ নানা ধরনের সংকট হবার কারণে তারা এখন লোকসানের পথে।
প্রতিবছর ফুলচাষিদের সংখ্যা তাই ক্রমাগত কমছে।
তিনি জানান, অন্য ফসলে চলে যাওয়া ফুলচাষিদের ফিরিয়ে আনার জন্য তারা চেষ্টা করছেন।
আগামীতে ক্ষতির মুখে না পড়ার জন্য নানা ধরণের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নারায়ণঞ্জের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. নূর জাহান।
তিনি জানান, গত বছর প্রায় ৭০ হেক্টর আবাদি জমিতে ফুলের চাষ করেন।
এ সকল জমিতে ২৪ ধরনের ফুল চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবছর সেই চাষের পরিমাণ কমে ৬২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
ফুলের ধরণ কমে গিয়ে ২০ ধরনের ফুল চাষ হয়েছে।
যাদের জমির পরিমাণ বেশি তারা ফুলের চাষ করলেও ক্ষুদ্র চাষিরা অন্য ফসল চাষ করছেন।
ফুলচাষিদের তারা নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তবে গত বছর তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা সম্ভব না হলেও আগামী দিনে এ সমস্যা সমাধানে নানা কার্যক্রম হাতে নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।