Wednesday, 24 December, 2025

বিদেশি ফল বাংলাদেশে চাষ, সম্ভাবনাময় ফল সমূহ


করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন।  সেই কারণে গ্রামে ফিরে গেছেন অনেকেই। দেশের বাইরে থেকেও অনেক শ্রমিক ফিরে এসেছেন। গ্রামে গিয়ে কৃষিকাজের দিকে ঝুঁকছেন এ সকল শ্রমিকেরাও। বাংলাদেশে অনেক বিদেশী ফলের চাষ শুরু হয়েছে এ ধরণের বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের কারণে। তেমনি কিছু বিদেশি ফল বাংলাদেশে চাষ এর অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। একই সাথে বাড়ছে এদের বাজার চাহিদা।

আরো পড়ুন
পালং শাক চাষ লাভজনক করতে চাষিদের করনীয় ও বর্জনীয়
পালং শাক চাষ লাভজনক করতে চাষিদের করনীয় ও বর্জনীয়

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পালং শাক একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও লাভজনক শীতকালীন সবজি। অল্প সময়ে, কম পুঁজিতে এবং সীমিত জমিতে এটি চাষ Read more

শীতে গবাদিপশুর যত্ন এবং চাষির করনীয়
শীতে গবাদিপশুর যত্ন এবং চাষির করনীয়

বাংলাদেশের কৃষিপ্রধান অর্থনীতিতে গবাদিপশু (গরু বা ছাগল) একটি অমূল্য সম্পদ। তবে শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে মানুষ যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে, Read more

সম্ভাবনাময় ফল সমূহ

বাংলাদেশে যেসব বিদেশি ফল চাষ করা হচ্ছে এবং সেগুলো থেকে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-

ড্রাগন ফল এর চাষ

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় ফল হচ্ছে ড্রাগন। সুস্বাদু, রঙিন এবং আকারে বেশ বড় এ ফলটির বাজার চাহিদা অনেক।

বিশেষজ্ঞরা বলেন ড্রাগন ফলে যে রঙিন পিগমেন্টেশন থাকে তা দেহের পুষ্টির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

একবার গাছ রোপণের পর বেশ কয়েক বার ফল আহরণ করা যায়। সাদা, লাল, গোলাপি এবং হলুদ প্রজাতির ড্রাগন ফল বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে।

সারা বাংলাদেশেই ড্রাগন ফল উৎপাদন উপযোগী আবহাওয়া বিদ্যমান। তবে পাহাড়ি এলাকায় এর উৎপাদন সবচেয়ে ভাল হয়।এছাড়া সেসব জমিতে ড্রাগন ফল উৎপাদিত হতে পারে যেসব জমিতে পানি জমে থাকে না।

বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদি মাসুদ এর মতে ড্রাগন ফল চাষ করে বছরে ৫-৬ লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব।

প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ১০-১২ টন ড্রাগন ফল উৎপাদিত হয়।

কৃষিবিদদের মতে, এক সাথে একই জমিতে একাধিক প্রজাতির ড্রাগন ফল চাষ করা ভাল। এতে করে পরাগায়ন ভাল হয়,  ফলনও বেশি হয়।

স্ট্রবেরির চাষ

ড্রাগন ফল এর পর যে ফলটির বেশ চাহিদা রয়েছে সেটি হচ্ছে স্ট্রবেরি।

সারা বাংলাদেশেই স্ট্রবেরি উৎপাদন সম্ভব। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সম্বলিত এই ফলটিও রঙিন ফল।

স্ট্রবেরি উঠে থাকে ডিসেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত ।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধীনে স্ট্রবেরির উদ্ভাবিত তিনটি জাত  বারি-১, বারি-২ এবং বারি-৩।

বারি-১ এর ফলন তোলার পর বেশিক্ষণ থাকে না। তবে এই সমস্যা বারি-২ ও পরে বারি-৩ জাত দুটি তে নেই। এই দুটি জাত পাকার পর দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত রাখা যায়।

স্ট্রবেরি চাষে  বিনিয়োগের পরিমাণ কম হয়

মাল্টা চাষ

বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় মাল্টা চাষ সম্ভব এবং এর উৎপাদনও হয়ে থাকে ভাল পরিমাণে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত জাত বারি মাল্টা-১। এর ফলন অনেক বেশি, আকারে বড় এবং অত্যন্ত মিষ্টি।

প্রতি হেক্টরে ২০-২২ টনের মতো উৎপাদিত এ ফল পাকা অবস্থাতেও সবুজ রঙের হয়ে থাকে।

সবুজ মাল্টার চারা উৎপাদন কলমের মাধ্যমে করা হয়। চারা কেনার সময়েই এককালীন খরচ হয়ে থাকে। চারা রোপণের পরের বছরেই ফল আসলেও ভাল ফলনের জন্য দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়।

বাজারে সবুজ মাল্টার সরবরাহ থাকে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ডিসেম্বর পর্যন্ত ।

মাল্টা লেবু জাতীয় ফলএকবার গাছ থেকে ছেড়ার পর আর পরিপক্ব হয় না।

রাম্বুটান চাষ

রাম্বুটানকে লিচুর বিকল্প হিসেবে মনে করা হয়। ভেতরে লিচুর মতোই দেখতে লাল রঙের এই ফল। মালয়েশিয়ান এই ফল খেতেও লিচুর মতোই।

শীতে তেমন একটা টিকে থাকতে পারে না বিধায় গরমের সময় এর ফলন বেশ ভাল হয়।

কৃষিবিদরা এটি মিশ্র বাগানে অন্য গাছের সাথে চাষ করার পরামর্শ দেন।

রকমেলন চাষ

মূলত সাউথ আফ্রিকান এই ফল এক ধরণের তরমুজ। সম্প্রতি বাংলাদেশেও এর চাষ হচ্ছে।

তবে যেসব এলাকাতে বৃষ্টি কিছুটা কম হয় সেখানে এর ফলন বেশি হলেও সব জায়গায় উৎপাদন সম্ভব।

একবার বপনের পর ফলন তিন থেকে চার বার তোলা সম্ভব। এটি চাষাবাদে খরচ খুব বেশি  হয় না।

অ্যাভোকাডো চাষ

সারা বিশ্বে সম্ভাবনাময় ফল সমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অ্যাভোকাডো। পুরো বিশ্বেই এটি বেশ দামি, বাংলাদেশে সম্প্রতি এর চাষাবাদের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে ড্রাফটিং করা সম্ভব হয়েছে।

ভাল মানের কোলেস্টেরল সরবরাহের জন্য এটি বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। জুলাই-অগাস্ট মাসে কেবল একবারই ফলন হয়।

0 comments on “বিদেশি ফল বাংলাদেশে চাষ, সম্ভাবনাময় ফল সমূহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ