Thursday, 25 September, 2025

বাম্পার ফলনেও অনিশ্চয়তা হাড়িভাঙ্গা আমে


হাড়িভাঙ্গা আম

বাম্পার ফলনেও অনিশ্চয়তা হাড়িভাঙ্গা আম নিয়ে

চলমান দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রচুর ক্ষতি যেমন হচ্ছে তেমনি ক্ষতি হচ্ছে কৃষিতেও।বাম্পার ফলনেও অনিশ্চয়তা হাড়িভাঙ্গা আম নিয়ে কৃষকের দুচিন্তা।  বিশেষ করে কৃষি ভিত্তিক বাণিজ্যের ক্ষয়-ক্ষতি এবার অপূরণীয়। এবছর আমের বাজারে নেমেছে ধ্বস। কোন ভাবেই কোন কিনারা হচ্ছে না। মিলছে কোন উপায়।

রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আমের বাজারও এবার প্রচুর পরিমাণে মন্দা যাচ্ছে। চাষিদের দাবী, গেল বছর অফ ইয়ার হলেও এ বছর প্রচুর ফলন হয়েছে আমের। তাই তারা আশা করেছিলেন লাভের। কিন্তু চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে তাদের সেই আশা। কোনভাবে বাজারজাত করা যাচ্ছে না।

আরো পড়ুন
ধানের বাম্পার ফলন: ফুল ফোটার সময় কৃষকের করণীয়

বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। এ দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এই ফসলের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ধানের ফলন বাড়াতে হলে এর Read more

ঢাকায় শুরু হলো আগ্রোফরেস্ট্রি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং গ্রামীণ জীবিকা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ বৈঠক। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) Read more

আমের দ্বিতীয় রাজধানি খ্যাত রংপুর অঞ্চল মূলত হাড়িভাঙ্গা আমের জন্য বিখ্যাত। শত শত মানুষ আমের চাষ করে একসময় স্বাবলম্বী হলেও এ বছর সে চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পারছে না। আর এর জন্য তারা দায়ী করছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আম বিপণনের জন্য পাঠাতে না পারা। এছাড়াও কম দামকেও দায়ী করছেন অনেকে।

হাড়িভাঙ্গা আম অনেক সুস্বাদু হলেও এর কেজি প্রতি দাম হয় ১-২০ টাকা মাত্র। রংপুর জেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায় যে প্রতি ৫ কেজি আমের মূল্য ১০০ টাকা দরে খোলা বাজারে বিক্রয় হচ্ছে। রংপুর জেলার বিভিন্ন পাইকারি বাজার যেমন- পদাগঞ্জ, পাইকরের হাট, শুকুরের হাট, পালিচার হাট ইত্যাদি পাইকারি বাজারে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে হাড়িভাঙ্গা আমের দাম অনেক কম।

হাড়িভাঙ্গা আম
হাড়িভাঙ্গা আম

হাড়িভাঙ্গা আমের দামঃ

  • বড় আকারের আম প্রতি মণ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা
  • মাঝারি সাইজের আম প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা
  • ছোট সাইজের আম প্রতি মণ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে

কৃষি বিভাগ দাবী করেন সবকিছু ভালভাবে হলে হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রয় করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হবে। সূত্র জানায় জেলার প্রায় ৩ হাজার ৬ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে যার মধ্যে ১ হাজার ৪০০ হেক্টর শুধুমাত্র হাড়িভাঙ্গা আম।

হাড়িভাঙ্গা আম ছাড়াও কেরোয়া, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, আশ্বিনি, মিশ্রিভোগ, আম্রপালি কপিল বাংড়ি, এছার তেলি, চাইবুদ্দিন ইত্যাদি আমেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সকলে ধারণা করছেন এবার কেবল হাড়িভাঙ্গা আমের উৎপাদন হবে অন্তত দেড় হাজার মেট্রিক টন। কৃষি বেতার তথ্য কর্মকর্তা আবু সায়েম এর মতে অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাবার পর হাড়িভাঙ্গা আম বাজারে আসে। জুনের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে এ আম পাওয়া যাবে।

তবে সব কিছু ছাপিয়ে আম চাষিদের আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে। দাম কম, বাজারজাতকরণে ব্যর্থতা, চলমান অনিশ্চিত পরিস্থিতি তাদের কে শংকিত করে তুলেছে।

0 comments on “বাম্পার ফলনেও অনিশ্চয়তা হাড়িভাঙ্গা আমে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ