নওগাঁর বদলগাছীতে লেবু চাষে সফল চাষীরা। সীড লেস ‘চায়না-৩’ জাতের লেবুর বাগানে চাষিরা সফলতা পেয়েছেন। লেবু চাষে তুলনামূলক পরিশ্রম কম। পাশাপাশি এটি লাভজনক বলে মনে করছেন তারা। কৃষি অফিস সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করছে। পাশাপাশি চাষিদের লেবু চাষে উৎসাহিত করছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে জেলায় লেবুর বাগান আছে ১৯০ হেক্টর জমিতে।
দেশের সবজির ভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগা জেলার বদলগাছী উপজেলা।
এ উপজেলায় সবজির পাশাপাশি কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে লেবুর বাগান গড়ে উঠেছে।
চাষিরা নিজেদের গড়ে তোলা লেবুর বাগান।
সেখান থেকে পরবর্তীতে কলম (কাটিং) করে তারা বাড়তি লাভ করে থাকেন।
এছাড়া নিজেদের জমিতেও সেই কলম তারা রোপণ করেন।
এতে করে লেবুর বাগান করার খরচ কম পড়ে প্রাথমিক অবস্থায়।
সব ধরনের মাটিতেই লেবুর চাষ করা সম্ভব হয়।
চাষিদের সাথে লেবু চাষের ব্যাপারে কথা হয়।
তারা জানান অন্যান্য ফসলের তুলনায় লেবুতে পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ কম।
রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের উপদ্রবও খুবই কম হয় লেবু চাষে।
চাষিরা জানান লেবুতে লাভ না হলেও লোকসান হবার কোনো ভয় থাকে না।
তবে রমজানের মধ্যে লেবুর চাহিদা বেশি থাকে।
সেকারণে তখন এর দামও বেশি হয়।
এতে অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া যায়।
বাঁশপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারুক হোসেন শিক্ষকতার পাশাপাশি লেবুর চাষ করছেন।
তার সাথে কথা বলে জানা যায় পাঁচ বছর আগে তিনি লেবু চাষ শুরু করেন।
তিনি পাঁচ কাঠা জমিতে ৪০টি লেবুর চারা রোপণ করেন।
প্রতিটি চারার দাম সে সময় ৪০ টাকা করে পড়েছিল।
সব মিলিয়ে বাগান করতে প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ পড়েছিল।
চারা রোপণের এক বছর পরেই গাছে লেবু আসতে থাকে।
প্রতি সপ্তাহে তার বাগান থেকে প্রায় দেড় হাজার পিস লেবু উত্তোলন হয়।
রমজান মাসে প্রতিপিস লেবু ৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
বর্তমানে প্রতি পিস ২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, শাক-সবজির আবাদে প্রতিদিন পরিশ্রম হয়।
কিন্তু লেবুর গাছে সে সমস্যা নেই।
লেবুতে কিছু পোকার আক্রমণ হয়।
সামান্য পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করলেই সব ঠিক হয়ে যায়।
এ বাগান থেকে লেবুর কলম করে আরও ৮ কাঠা জমিতে বাগান করেছেন।
এতে চারা কেনার খরচও বেঁচে গেছে তার।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, চাষিদের লেবু চাষের প্রতি আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে করে লেবুর বাগান ক্রমে বাড়ছে।
তিনি বলেন, চাষিদের লেবু চাষে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়।
রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান আলী।
তিনি বলেন, লেবু একটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল।
এতে পরিশ্রম কম ও দাম ভালো পাওয়া যায়।
উপজেলায় প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ হয়েছে।
উপজেলায় লেবুর পাশাপাশি মাল্টা ও কমলা চাষ শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।