সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার গুরমা হাওরের আওরজান ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়নি এখনো। বাঁধের ২০০ মিটার স্থানে এখনো কোনো ধরণের কাজই শুরু হয়নি। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বাঁধের এ অংশ এখনো ফাঁকা পড়ে থাকায় তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
অরক্ষিত আড়াই হাজার একর জমি
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) কয়েকজন সদস্যর সাথে এ বিষয়ে কথা হয়।
তারা জানান, বাঁধের মূল প্রকল্পের মধ্যে ওই ২০০ মিটার স্থান অন্তর্ভুক্তই করা হয়নি।
তবে সেটা কেন অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি তা নিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কেউ কোন সদুত্তর করতে পারেননি।
যার ফলে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে ওই হাওরের প্রায় আড়াই হাজার একর বোরো জমি।
ওই এলাকার আটটি গ্রামের কৃষকেরা এই অবস্থায় দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছেন।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে খোজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীন উপজেলার নয়টি হাওর।
এগুলো হল চন্দ্র সোনার থাল, জয়ধনা, ধানকুনিয়া, সোনামড়ল, ঘোড়াডোবা, রুই বিল, কাইলানী, গুরমা, গুরমার বর্ধিতাংশ।
এসব হাওরে বর্তমানে ১৫৭টি প্রকল্প বিদ্যমানে আছে।
েএসকল হাওরের মধ্যে গুরমা হাওরের আওরজান ফসল রক্ষা বাঁধের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার।
গত বছর এ বাঁধের পুরো অংশে কাজ হয়েছে।
কিন্তু এ বছর বাঁধের মধ্যবর্তী ২০০ মিটার স্থান প্রকল্প থেকে বাদ পড়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আওরজান ফসল রক্ষা বাঁধের ওই ২০০ মিটার অংশ ছাড়া অন্যান্য সমগ্র স্থানে মাটি ফেলা হয়েছে।
শুধু মধ্যবর্তী ওই স্থানেটিতেই নতুন করে কোনো মাটি পড়েনি।
আড়াই হাজার একর জমির বোরো ধানের চাষ হয়েছে
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে আওরজান ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয় যা ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবার কথা ছিল।
এ হাওরে উপজেলার সরস্বতীপুর, সাদীপুর, তেলিগাঁও, কাহালা, বিশারা, দরাপপুর, নোয়াগাঁও ও দুগনই গ্রামে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।
প্রায় আড়াই হাজার একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সুলতান মজুমদার।
তিনি বলেন, এখনো বাঁধের একাংশে কাজ শুরু না হওয়ার বিষয়টি দুঃখ জনক।
এটাকে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদাসীনতা বলে মনে করেন।
দ্রুত ওই অংশে মাটি ফেলা না হলে আগাম বন্যায় ফসলডুবির আশঙ্কা আছে বলে জানান এই আহবায়ক।
সুনামগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলার কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যসচিব মো. ইমরান হোসেন।
বাঁধের এ স্থান প্রকল্প থেকে কেন বাদ পড়েছে, সেটা তিনি বলতে পারছেন না।
হাওরের ১২৩ নম্বর পিআইসির সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে ওই অংশের কাজ করার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান এই সদস্য সচিব।
মূল প্রকল্পের সঙ্গে বাঁধের ওই ২০০ মিটার স্থান দ্রুতই যুক্ত করে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন মৌখিকভাবে প্রাপ্ত আদেশের কথা জানান।
তিনি আরও বলেন এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র হাতে পাননি তিনি।