পেয়ারা আমাদের দেশে খুবই পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি ফল। পেয়ারা দ্রুত বর্ধনশীল গ্রীষ্মকালীন ফল। তবে বর্তমানে সারা বছরই পেয়ারা চাষাবাদ হয়ে থাকে।
আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের পেয়ারা পাওয়া যায়। তবে ভালো ফলন পেতে হলে ভালো জাত নির্বাচন করতে হবে।
পেয়ারার উল্লেখ্য যোগ্য জাতের এর মধ্যে রয়েছে-
কাজী পেয়ারা, বারি পেয়ারা-২, বারি পেয়ারা-৩, বাউ পেয়ারা-১ (মিষ্টি), বাউ পেয়ারা-২, বাউ পেয়ারা-৩, বাউ পেয়ারা-৪ (আপেল), বাউ পেয়ারা-৫ (ওভাল), এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-৬ (জেলি), থাই পেয়েরা-৭, থাই গোল্ডেন-৮ এবং থাই পেয়ারা। ছাড়াও ইপসা -১, ইপসা -২ এবং স্ট্রবেরি পেয়ারাও ছাদে/ টবে চাষ করা যায়।
কাজী পেয়ারা পরিচিতি:
ফল আকারে বেশ বড়। ওজন ৪০০-৫০০ গ্রাম। পরিপক্ক ফল হলুদাভ সবুজ এবং ভিতরের শাঁস সাদা। এ ফল ৭-১০ দিন ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষন করা যায়। কাজী পেঁয়ারা খেতে সামান্য টক।
বারি পেয়ারা-২ পরিচিতি
গাছ ছাতাকৃতি ও কাজী পেঁয়ারার চেয়ে খাটো হয়। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। এ জাতটি বর্ষাকাল ও শীতকাল ২ বার ফল দেয়। পেঁয়ারা খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি।
বারি পেয়ারা-৩ পরিচিতি
এটির শাঁস লাল রঙের। ফলের গড় ওজন ১৮০ গ্রাম। ফল পাকলে গায়ের রঙ হলদে সবুজ।
থাই পেয়েরা-৭ পরিচিতি
থাই পেয়েরা-৭ এর আকার গোলাকার, রঙ হলদে সবুজ, প্রতিটি পেয়ারার ওজন গড়ে ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম। গাছের উচ্চতা ২.৫ থেকে ১০ মিটার। ফুল ফোটা থেকে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত ৯০ দিন সময় লাগে। এ জাতের বড় বৈশিষ্ট্য হলো- বারো মাসই এ পেয়ার পাওয়া যায়। বীজ কম ও নরম।
বাউ পেয়ারা-১ পরিচিতি
বামন জাতের মৌসুমী পেঁয়ারা। নিয়মিত ফল দেয়। আকৃতি ডিম্বাকার। পরিপক্ক অবস্থায় সোনালী সবুজ। প্রতিটি ফলের ওজন ১৫০-৩০০ গ্রাম। ব্রিক্স মান ১১.৬- ১২.৬%।
বাউ পেয়ারা-২ (রাঙা পেয়ারা)
বামন জাতের মৌসুমী পেঁয়ারা। নিয়মিত ফল দেয়। আকৃতি ঈষৎ গোলাকার থেকে ডিম্বাকার। উপরিভাগ অমসৃণ, শাঁস লাল। পরিপক্ক অবস্থায় সোনালী সবুজ। প্রতিটি ফলের ওজন ৩০০-৬০০ গ্রাম। ব্রিক্স মান ৯.৭১-১২.৬৭%।
থাই পেয়ারা পরিচিতি
থাই পেয়ারা ঈষৎ গোলাকার থেকে বেলুনাকৃতি, উপরিভাগ হালকা অমসৃণ, শাঁস পুরু ও কচকচে, বীজের বল ছোট, শীতকালে বেশি মিষ্টি, সংরক্ষণ কাল বেশী, ফলন বেশী, ফলের ওজন ৩০০-৮০০ গ্রাম।
বাউ পেয়ারা-৩ (চৌধুরী পেয়ারা)
ফলের আকৃতি ডিম্বাকার। উপরিভাগ মসৃণ, শাঁস রক্তাভ হলুদ। পরিপক্ক অবস্থায় সোনালী সবুজ। প্রতিটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম।
বাউ পেয়ারা-৪ (আপেল পেয়ারা)
ফলের আকৃতি ঈষৎ গোলাকার থেকে ডিম্বাকার। উপরিভাগ অমসৃণ, শাঁস লাল। পরিপক্ক অবস্থায় উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি ফলের ওজন ১১০ গ্রাম।
বাউ পেয়ারা-৫ (ওভাল পেয়ারা)
ফলের আকৃতি ঈষৎ গোলাকার থেকে ডিম্বাকার। উপরিভাগ অমসৃণ, শাঁস লাল। পরিপক্ক অবস্থায় উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি ফলের ওজন ৩০০ গ্রাম।
স্বাদে মিষ্টি।
থাই গোল্ডেন-৮ পরিচিতি
থাই গোল্ড-৮ বারোমাসি পেয়ারা বাংলাদেশের মধ্যে একটি নতুন জাতের পেয়ারা। আকারে আপেলের মতো গোল।প্রতিটি পেয়ারার ওজন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম। ফলন দ্রুত ম্যাচিউড/ পরিপক্বতা আসে তাই পেয়ারা দ্রুত গাছ থেকে সংগ্রহের উপযোগী হয়। স্বাদে মিষ্টি ও চারা গাছ অবস্থা ফুল- ফল আসতে শুরু করে বিধায় চাহিদা অনেক বেশি।
স্ট্রবেরি পেয়ারা
ব্রাজিলের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে স্ট্রবেরি পেয়ারার জন্ম এবং হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে এর চাষ অনেক বেশি হয়।বর্তমানে বাংলাদেশেও স্ট্রবেরি পেয়ারার চাষ হচ্ছে।
এই পেয়ারা দেখতে দেশি পেয়ার মতোই। তবে আকারে অনেক ছোট। এই পেয়ারার রং খুবই আকর্ষনীয়। স্ট্রবেরির মতো লাল, হলুদ ও পার্পেল কালারের হয়ে থাকে। এই পেয়ারা প্রচুর পরিমাণে ধরে। এটি দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু। ছাদের টবে এ পেয়ার চাষ করা যায় – বিস্তারিত