কম চাহিদা আর রপ্তানি প্রায় বন্ধ থাকায় পানির দরে পান বিক্রি হচ্ছে ঝিনাইদহে। এতটাই দাম কম যে উৎপাদন খরচও উঠছে না। এমন টাই জানিয়েছেন কৃষকরা। জেলা শহরের বিভিন্ন হাটে যেমন নতুন হাটখোলা, হলিধানী, ডাকবাংলা, হরিণাকুন্ডু উপজেলার আমতলা, জিন্দারের মোড় ইত্যাদি অঞ্চলে খুবই কম দামে বিক্রি হচ্ছে পান। শুক্রবার হলিধানী হাটে ভালোমানের প্রতি পণ (৮০টি) পান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়।
কিছু পান পাঁচ টাকা পণেও বিক্রি হচ্ছে।
চাষিরা বলেন যে, পানের দাম অর্ধেকে নেমেছে গত বছরের তুলনায় এ বছর।
তাদের উৎপাদন খরচও উঠছে না দাম এত কম হওয়ায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায় যে, জেলার ছয় উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হয়েছে এই বছর।
হরিণাকুন্ডু উপজেলার কিসমত ঘোড়াগাছা গ্রামের পানচাষি হাবিব চৌধুরী।
তিনি জানান যে, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পানের যে দাম তা সবচেয়ে কম।
যার কারণে এবার উৎপাদন খরচও উঠছে না।
একই গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বিশ্বাস জানান, এক বিঘা পান আবাদ করতে সার, খৈল, বিচুলি, পাটকাঠি, ওয়াসি, শ্রমিকসহ হিসাব করলে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে।
তবে বর্তমানে পানের দাম অনুসারে ভালোমানের পান হলেও ১ লাখ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না।
শহরের নতুন হাটখোলা বাজারের পান ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান। তিনি জানান, গত বছরের এই সময়ে যে পান ৭০ থেকে ৮০ টাকা পণ দরে বিক্রি হয়েছিল।
সেই পান এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে।
ব্যবসায়ী বশির উদ্দিন জানান, ঝিনাইদহ থেকে পান দেশের বিভিন্ন স্থানে যেমন ঢাকা, সিলেট, রংপুর ইত্যাদি অঞ্চলে পাঠানো হয়।
ওইসব এলাকায় বর্তমানে পানের আবাদ হচ্ছে কিছু কিছু করে।
যে কারণে এখন পানের চাহিদা সেই মোকামগুলোতে কম হচ্ছে এবং দাম কমছে।
ঝিনাইদহ জেলা মার্কেটিং অফিসার জানান যে, কৃষকরা যেন পানের ন্যায্যমূল্য পান তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন তারা।
সিন্ডিকেটের কবলে পানচাষিরা যেন না পড়েন এ কারণে নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করছেন।
আর কৃষি বিভাগের সাথে আলোচনা চলছে কিভাবে বিদেশে পান রপ্তানি বাড়ানো যায় এ ব্যাপারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজগর আলী।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশ থেকে পান রপ্তানি করা হয়।
লকডাউনের কারণে পান রপ্তানি বন্ধ থাকলেও কম পরিমাণে এখন কিছু পাঠানো হচ্ছে।
পানের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য তারা চেষ্ট করছেন বলে জানান।