দেশে নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে।
সার্বিক মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যা অক্টোবর মাসে ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ বছরের শুরুতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ বেড়ে গেলেও সেপ্টেম্বর মাসে তা কিছুটা কমেছিল। তবে নভেম্বর মাসে তা আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এক দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
গ্রাম ও শহরের মূল্যস্ফীতি
- গ্রামাঞ্চল:
- সার্বিক মূল্যস্ফীতি: শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
- খাদ্য মূল্যস্ফীতি: ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।
- খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি: ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।
- শহরাঞ্চল:
- সার্বিক মূল্যস্ফীতি: শূন্য দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
- খাদ্য মূল্যস্ফীতি: ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
- খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি: ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।
নীতিগত পদক্ষেপ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিক্রিয়া
মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদহার বাড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও আশানুরূপ ফল আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “বিশ্বের কোনো দেশই ১২ মাসের আগে মূল্যস্ফীতি কমাতে সক্ষম হয়নি। আমরা মাত্র তিন মাস আগে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও আট মাস অপেক্ষা করতে হবে।”
সমাধানের অপেক্ষায়
বর্ধিত মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ বিশেষভাবে বিপাকে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলা উন্নত করা এবং কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নই এ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে। তবে জনগণকে দ্রুত কোনো স্বস্তি দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।